• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বিশ্ববাজারে ইলেকট্রিক কারের রাজত্ব শুরু?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১, ১১:০৮ এএম
বিশ্ববাজারে ইলেকট্রিক কারের রাজত্ব শুরু?

একসময় বৈদ্যুতিক গাড়ি বা ইলেকট্রিক কার সবার কাছে স্বপ্নের মতো হলেও এখন সড়কে সচরাচরই ইলেকট্রিক কার কিংবা জ্বলানি ও বিদ্যুৎ উভয়চালিত হাইব্রিড গাড়ি হরহামেশাই দেখা যায়। বিশ্বের অন্যতম প্রধান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা এরই মধ্যে পেট্রোলচালিত গাড়ি উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বিভিন্ন দেশের শীর্ষ গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোও ঝুঁকছে ইলেকট্রিক কারের দিকেই।

তবে কি ইলেকট্রিক কার সড়কেও আধিপত্য শুরু করেছে?
উত্তরটা সহজ নয়। তবে বর্তমান বিশ্ববাজারের পরিসংখ্যান কিন্তু ইলেকট্রিক কারের পক্ষেই ইঙ্গিত করছে। বিবিসির তথ্যমতে, ইলেকট্রিক কার এরই মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেলচালিত গাড়ির বিক্রিকে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর সঙ্গে জনগণের পরিবেশ সচেতনতার সম্পর্ক আছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই কার্বন নিঃসরণ কমানো, পরিবেশ দূষণ রোধসহ নানাবিধ উদ্দেশ্যে পেট্রোল ও ডিজেলচালিত গাড়ি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে। ফলে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি পথ প্রশস্ত হয়েছে। আর পর্যবেক্ষকরা বলেন, প্রযুক্তিগত বিপ্লবের কারণেই একসময় জ্বালানিচালিত গাড়ির চাহিদা তলানিতে গিয়ে ঠেকবে ।

যেভাবে বাজার দখল করছে ইলেকট্রিক কার 
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ৯০-এর দশকে ইন্টারনেট যেভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে ইলেকট্রিক কারও একইভাবে বাজার দখল করছে। ২০২০ সালে বিশ্বে ৩২ লাখ ইলেকট্রিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে। এটি পৃথিবীতে মোট গাড়ি বিক্রির পরিমাণের মাত্র ৫ শতাংশ। তবে পরিসংখ্যান বলছে, এই গ্রাফটি ঊর্ধ্বগামী, যা এরই মধ্যে অক্ষের ওপরদিকে উঠতে শুরু করেছে।

বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস এর গবেষণায় দেখা যায়, ২০২৫ সালে বিশ্বে মোট বিক্রি হওয়া গাড়ির ২০ শতাংশই হবে ইলেকট্রিক গাড়ি। ২০৩০ সালে এই হার হবে ৪০ শতাংশ। আর ২০৪০ সালে পৃথিবীতে যত নতুন গাড়ি বিক্রি হবে তার সবই হতে পারে বৈদ্যুতিক গাড়ি!

১৮৩০ সালের দিকে প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করেছিলেন স্কটিশ বিজ্ঞানী রবার্ট এ্যান্ডারসন। ২০০০ সালের দিকে জেনারেল মোটর্স ইভিওয়ান নামে ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে আনে। তবে ১০০ কোটি ডলারের সেই গাড়ি ইঞ্জিন ছিল খুবই বাজে। এটি ঘণ্টায় ৫০ মাইলের বেশি গতিতে চলতে পারত না। আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় জেনারেল মোটরস এই মডেলের সব গাড়ি ধ্বংস করে ফেলে। তবে বর্তমানে ইলেকট্রিক গাড়ি ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ মাইল বেগেও চলতে পারে। স্থির অবস্থা থেকে মাত্র কয়েক সেকেণ্ডেই সর্বোচ্চ গতি উঠানো সম্ভব।

গাড়ির প্রযুক্তিগত পরিবর্তন
বৈদ্যুতিক গাড়িতে ইঞ্জিন থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংযোজন, ড্রাইভার ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হওয়ার সুবিধা, ব্যাটারি, চার্জিং পদ্ধতি আর গাড়ির ডিজাইন সবকিছুতেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ ও জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্র আরএমআই -এর গবেষক মেডেলিন টাইসন বিবিসিকে জানান, বর্তমানে প্রতি কিলোওয়াট ব্যাটারির শক্তি উৎপাদনের খরচ হয় মাত্র ১০০ ডলার। এক দশক আগেও যা ছিল প্রায় ১০০০ ডলার। এর ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দামও পেট্রোল বা ডিজেলচালিত গাড়ির চেয়ে সস্তা হয়ে যাচ্ছে। জাগুয়ার, ভলভো, ফোর্ড ও ফোক্সওয়াগনসহ বিশ্বের শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ২০৩০ সালের মধ্যেই ৭০ থেকে ১০০ ভাগ ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে।

Link copied!