• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫
নিউক্লিয়ার ফিউশন

পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনে নতুন যুগের সূচনা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২২, ০৮:০৪ পিএম
পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনে নতুন যুগের সূচনা
নিউক্লিয়ার ফিউশন চেম্বার

সূর্যের প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রায় ৫০ বছর ধরে গবেষণা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। এবার অপরিমেয় পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎপাদনের সেই জাদুর কাঠি হাতে পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। নিউক্লিয়ার ফিউশন পদ্ধতিতে শক্তি উৎপাদন করেছেন তারা।

সূর্যসহ মহাবিশ্বের সকল নক্ষত্রে শক্তি উৎপাদিত হয় ফিউশন পদ্ধতিতে। সেখানে ব্যবহৃত হয় হাইড্রোজেন। যা বিক্রিয়া শেষে হিলিয়ামে রুপান্তরিত হয়। সেই ফিউশন থেকে উৎপাদিত শক্তি আমরা দেখতে পাই আলো রূপে। আর বর্তমানে আমাদের পারমাণবিক চুল্লিতে শক্তি উৎপাদিত হয় ফিশন পদ্ধতিতে।

পারমাণবিক চুল্লিতে ফিশন পদ্ধতিতে শক্তি উৎপাদনের জন্য তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরমাণুগুলোকে ভাঙা হয়। অন্যদিকে সূর্যের ফিউশন পদ্ধতিতে হাইড্রোজেন বা লিথিয়াম পরমাণুগুলোকে প্রচণ্ড চাপ ও তাপে একীভূত হতে বাধ্য করা হয়, যার ফলে শক্তি নির্গত হয় সেখান থেকে। দুটো প্রক্রিয়াতেই চেইন রিয়েকশনের মাধ্যমে বিক্রিয়া আপন গতিতে চলতে থাকে। তবে কিছু পার্থক্য আছে এই দুটো প্রক্রিয়ায়।

ফিউশন প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন তুলনামূলক নিরাপদ এবং এখানে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য উৎপাদিত হয় অনেক কম। আবার এই বর্জ্যের তেজস্ক্রিয়তা শেষ হয় খুব দ্রুত। আবার বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন বা লিথিয়াম ব্যবহার করার কারণে, শক্তি উৎপাদনে কাঁচামাল নিয়ে কোনো চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কারণ মহাবিশ্বে যে মৌলটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, সেটি হলো হাইড্রোজেন। তাছাড়া পৃথিবীতে লিথিয়ামেরও কোনো ঘাটতি নেই। আবার এই প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদনে কোনো গ্রিন-হাউজ গ্যাস নির্গত হয় না। তাই এই শক্তি পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনতে দারুণ ভূমিকা রাখবে।

অন্যদিকে পারমাণবিক চুল্লির ফিশান পদ্ধতিটি ফিউশন পদ্ধতির ঠিক উল্টো। এই পক্রিয়ার ভয়াবহতা আজ পৃথিবীর সামনে পরিষ্কার। এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও বেশ কঠিন ও ব্যয়সাপেক্ষ। এই পদ্ধতিতে শক্তি উৎপাদনে যেকোনো দুর্ঘটনা পুরো পৃথিবীকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। যেখানে, ফিউশন পদ্ধতিতে শক্তি উৎপাদন ব্যবস্থায় নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে শক্তিই উৎপাদন করা যাবে না।

তবে বিজ্ঞানীরা প্রায় অশেষ শক্তি উৎপাদনে সফলতার মুখ দেখলেও, এই প্রযুক্তিটিকে আরও কার্যকরি করতে হবে। বর্তমানে এই পদ্ধতিতে যে শক্তি উৎপাদন করা হচ্ছে তা উৎপাদন খরচের প্রায় সমান। অর্থাৎ কম শক্তি দিয়ে এই প্রক্রিয়ায় বেশি শক্তি উৎপাদন পেতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক বছর। এখানে আশার ব্যাপার হলো, আমরা পরিচ্ছন্ন জ্বালানি তৈরির দিকে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ পার হলাম। 

Link copied!