দেশে অবৈধ ও ক্লোন মোবাইল ফোন বন্ধে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হচ্ছে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার সিস্টেম। এই তারিখের পর থেকে নতুন কোনো হ্যান্ডসেট মোবাইল নেটওয়ার্কে চালু করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে ‘রেজিস্ট্রেশন’ করতে হবে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হবে পুরনো ফোন
১৬ ডিসেম্বরের আগে যেসব ফোন ইতিমধ্যে কোনো নেটওয়ার্কে সক্রিয় রয়েছে, সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে (অটো রেজিস্ট্রেশন) নিবন্ধিত হয়ে যাবে। ব্যবহারকারীদের কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে না।
তবে ওই তারিখের পর নতুন সংযুক্ত সব ফোনের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিবন্ধন ছাড়া ফোন চালু থাকলেও ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন না করলে তা নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।
নিবন্ধন যাচাইয়ের সহজ উপায়
ব্যবহৃত মোবাইলটি বৈধ কি না, তা জানতে—
ধাপ ১: ফোন থেকে *16161# ডায়াল করুন।
ধাপ ২: হ্যান্ডসেটের ১৫-সংখ্যার IMEI নম্বর লিখে পাঠান।
ধাপ ৩: ফিরতি মেসেজে জানানো হবে ফোনটি বৈধ না অবৈধ।
এছাড়াও neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইট, নাগরিক পোর্টাল বা নিকটস্থ অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থেকেও একই তথ্য জানা যাবে।
নতুন ফোন কেনার আগে যা করবেন
১৬ ডিসেম্বরের পর যেকোনো দোকান বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ফোন কেনার আগে সেটি বৈধভাবে নিবন্ধিত কি না তা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছে বিটিআরসি।
ফোনের ক্রয় রশিদ সংরক্ষণ করাও বাধ্যতামূলক থাকবে।
বিদেশ থেকে কেনা বা উপহার পাওয়া ফোনের নিয়ম
বিদেশ থেকে কেনা বা উপহার পাওয়া ফোন প্রথমে অস্থায়ীভাবে চালু থাকবে। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে।
এর জন্য neir.btrc.gov.bd পোর্টালে গিয়ে “Special Registration” সেকশনে IMEI নম্বর ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (পাসপোর্ট, ইমিগ্রেশন সিল, ক্রয় রশিদ ইত্যাদি) জমা দিতে হবে।
ডিরেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক
১৬ ডিসেম্বরের পর অন্যকে ফোন বিক্রি বা উপহার দিতে চাইলে আগে সেটি ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ করতে হবে। অন্যথায় নতুন মালিকের নামে হ্যান্ডসেট নিবন্ধন সম্ভব হবে না।
যেভাবে ডিরেজিস্ট্রেশন করবেন:
- ইউএসএসডি (*16161#), নাগরিক পোর্টাল (neir.btrc.gov.bd
- ), মোবাইল অপারেটরের পোর্টাল বা অ্যাপ থেকে।
- ব্যবহারকারীর NID-এর শেষ ৪ সংখ্যা দিতে হবে।
- ব্যবহৃত সিম অবশ্যই সেই NID-এ নিবন্ধিত হতে হবে।
করপোরেট ব্যবহারকারীরাও একইভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত বা ‘Key Contact Point’ এনআইডি ব্যবহার করে ডিরেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
চুরি বা হারিয়ে গেলে করণীয়
ফোন হারিয়ে গেলে NEIR পোর্টাল বা মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে ফোনটি তাৎক্ষণিকভাবে ব্লক বা আনব্লক করা যাবে।
ইন্টারনেট ছাড়াই সেবা পাওয়ার উপায়
যাদের ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তারা *16161# ডায়াল করে বা ১২১ নম্বরে কল দিয়ে তথ্য জানতে পারবেন।
বিক্রেতা ও আমদানিকারকদের করণীয়
বাজারে আসার আগে প্রতিটি হ্যান্ডসেটের IMEI তথ্য বিটিআরসিতে জমা দিতে হবে। নিবন্ধিত নয় এমন (নকল বা ক্লোন) হ্যান্ডসেট বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
বিটিআরসি বলছে, এই উদ্যোগের ফলে দেশে অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ হবে, এবং চুরি বা ক্লোন ফোন শনাক্ত করা সহজ হবে। তবে ডিরেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হওয়ায় গ্রাহক ভোগান্তি এড়াতে সংস্থাটি অতিরিক্ত হেল্পডেস্ক ও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা করছে।
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    






































