রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, “১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। স্েঙগ সঙ্গে সমগ্র জাতিকে মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধে অনুপ্রাণিত করে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি করেছিলেন। তাইতো সামগ্রিকতায় বঙ্গবন্ধু যেমন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, তেমনি বিশ্বের ইতিহাসেও সেরা মহানায়ক।”
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্টার পর পরই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন এই পাকিস্তান বাঙালি জাতির জন্য সৃষ্টি হয়নি। বরং ব্রিটিশ শাসন থেকে বের হয়ে নতুন করে পাকিস্তানের নির্যাতন ও শোষণের কবলে পড়েছে বাঙালি জাতি। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধুকে অনেক কষ্ট ও অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।”
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “১৯৪৮ সালের মাতৃভাষা বাঙলা ভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলনের দূর্গম পথে যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনের বিরোধী আন্দোলন, ৬২ সালের শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ সালের গণঅভ্যূত্থান, ৭০ সালের নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তার সমাপ্তি ঘটে। বাঙালির এসব আন্দোলনের পিছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান। তিনি জাতিকে মুক্তি সংগ্রামের জন্য সবাইকে সংগঠিত করেন। সেই সঙ্গে বাঙালি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।”
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, “দীর্ঘ নয় মাসের লড়াই শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে মহান বিজয়। আর এ বিজয়ের পেছনে যে ব্যক্তিটি সার্বক্ষণিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।”
মো. আবদুল হামিদ বলেন, “বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত ‘কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কূটনৈতিক অঙ্গনে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বমানবতার ইতিহাসে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। আমি আশা করি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানেও ভারতসহ বিশ্ব সম্প্রদায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”