• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

‘মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে ছাড় দেওয়া হবে না’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২২, ০৫:১৮ পিএম
‘মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে ছাড় দেওয়া হবে না’

কোথাও মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, “ঢাকা শহরের কোনো জায়গা কিন্তু মালিক ছাড়া নেই। প্রতিটি জায়গা ব্যক্তিমালিকানাধীন অথবা কোনো সংস্থা-প্রতিষ্ঠানের অধীন। অতএব মালিক বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের জায়গা ও জলাশয় পরিষ্কার করতে হবে।”

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২-এ নগর ভবনের অডিটরিয়ামে কিউলেক্স মশার প্রকোপ-নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

সবাইকে সাত দিন সময় দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, “আগামী সাত দিন পর আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করব। ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবে। কোথাও কচুরিপানা বা মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেওয়া হবে না, নিয়মিত মামলা দেওয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হবে।”

মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধি এবং ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধি।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, “আমি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি এয়ারপোর্টের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতে মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থার অধীন। জলাশয়গুলোতে প্রচুর কচুরিপানা। এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি করপোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দিই না কেন মশা নিধন করা সম্ভব না। সবাইকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে হবে।”

এ সময় ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগকে সব সংস্থা ও হাউজিং সোসাইটিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ১ জানুয়ারি থেকে এক বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্দিষ্ট করে একটি ক্যালেন্ডার প্রণয়নের নির্দেশ দেন মেয়র।  

আতিকুল ইসলাম বলেন, “শুধু কিউলেক্স মশা নয়। এডিস মশা এখনো রয়েছে। আমাদের মশকনিধন কার্যক্রম ও অভিযান চলমান। দুই ভবনের মাঝখানে খালি জায়গায় ময়লা ফেলে দেওয়া হয়। দয়া করে এটি বন্ধ করুন। স্থানীয় জনগণ ও হাউজিং সোসাইটির উদ্যোগে এগুলো বন্ধে কাজ করুন। অনেক হাউজিং সোসাইটি মশার ওষুধ ছিটানোর মেশিন কিনেছেন। আমরা সেসব সোসাইটিকে ডিএনসিসি থেকে বিনা মূল্যে মশার ওষুধ সরবরাহ করব।”

তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও অন্যান্য ভবনের পয়োবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি বৃষ্টির পানি নামার সারফেস ড্রেন দিয়ে শহরের খাল ও জলাশয় দূষণ করছে। আমরা বারবার বলেছি প্রতিটি ভবনে অ্যাট সোর্সে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা এলাকায় আমাদের বর্জ্য বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করেছে। আগামী ৪ জানুয়ারি এসব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। সারফেস ড্রেনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, “মানুষ এখন অনেক সচেতন। সবাই জানেন কেন এবং কোথায় মশার জন্ম হয়। কিন্তু মানুষ মশা নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত হচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতনতার পাশাপাশি সম্পৃক্ত হতে হবে। একা কারও পক্ষেই মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।”

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ডিএনসিসির মশক নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারাসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!