• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অবরোধের প্রভাবে জনজীবনে দুর্ভোগ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম
অবরোধের প্রভাবে জনজীবনে দুর্ভোগ
ছবি : সংবাদ প্রকাশ

“কাজের জন্য আমি সৌদি আরবে গিয়েছিলাম। দীর্ঘদিন পর বাড়িতে যাচ্ছি। চিন্তুা করেছিলাম বাড়ির লোকদের একটা চমক দেব। কিন্তু অবরোধের কারণে আর হবে না। প্লেনে (উড়োজাহাজ) উঠার পর থেকে মনের মধ্যে অনেক আনন্দ ছিল। কিন্তু দেশের মাটিতে পা রেখে সব ম্লান হয়ে গেল। গাড়ির জন্য বসে থাকলেও গাড়ি কিংবা টিকিট কোনোটাই পাচ্ছি না। আমি তো প্রবাসী। দেশে অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি সম্পর্কে জানতাম না। এই দুর্ভোগ আর ভালো লাগছে না।”

আক্ষেপ করে এই কথাগুলো বললেন মোহাব্বত নামের এক যুবক। রোববার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় অবরোধের পরিস্থিতি জানতে কথা হয় তার সঙ্গে। আলাপের এক পর্যায়ে সংবাদ প্রকাশের কাছে এভাবেই তার আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

শুধু মোহাব্বত নয়। তার মতো অনেক যাত্রীকে পাওয়া যায় এই টার্মিনালে। কারও বাড়িতে অসুস্থ রোগী রয়েছে, কেউ দীর্ঘদিন পর বাড়িতে যাবেন। আবার কেউ যোগ দিবেন পারিবারিক অনুষ্ঠানে। কিন্তু দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব সাধারণ মানুষ। একই সঙ্গে কষ্ট বেড়েছে পরিবহন চালকদেরও। কমে গেছে প্রতিদিনের আয়। আর জ্বালাও-পোড়াও এর মতো ঘটনাগুলো সব মানুষের মনে ক্ষত তৈরি করে।

চলমান এসব কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, অবরোধ-হরতাল কিংবা পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নয়, সমঝোতার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হোক। তবেই দেশ ও দশের মঙ্গল হবে।

দেলোয়ার হোসেন নামের এক যুবক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “নওগাঁয় আমার গ্রামের বাড়ি। এখানে যাত্রাবাড়িতে থাকি। গাবতলীতে এসে বসে আছি। কিন্তু বাস পাই না। বাড়িতে অসুস্থ রোগী আছে। চলমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কের মধ্যে আছি। বাড়ি যেতে পারব কি না, জানি না। মানুষকে এই দূর্ভোগ না দিয়ে, সমঝোতায় বসলেই তো হয়।”

যাত্রীবাহী বাস সুন্দরবন এক্সপ্রেস এর সুপারভাইজার জামাল বলেন, “এর আগে তিনদিন অবরোধ গেল। এখন আবার দুই দিন অবরোধ দিছে। আমরা গাড়ি বের করতেই পারছি না। যাত্রী নাই। দুই একজন যাত্রী দিয়ে তো আর বাস ছাড়া যাবে না। আপ-ডাউনে (যাওয়া- আসা) দুই ট্রিপ বাস নিয়ে গেলে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। সকাল থেকে ১১ টা পর্যন্ত মাত্র ২/৩ জন যাত্রী পাইছি। অন্যদিন এই সময়ে প্রায় ৪ ট্রিপের ওপরে গাড়ি যায়। মানুষ আতঙ্কে বের হতে চায় না। আমরা চাই দলগুলো একটা সমাধানে আসুক। তাহলেই আমরা বাঁচি।”

পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ, কর্মসূচি ও সমঝোতার বিষয়ে কথা হয় রাজনৈতিক দলের দুই কর্মীর সঙ্গে।

আলাপের এক পর্যায়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “অবরোধ সাধারণ মানুষের কাছে হুমকিস্বরূপ। অবরোধ ডেকে গাড়ি পোড়াচ্ছে। তারা চায় নির্বাচন বাতিল করতে। সমঝোতার দরজা এতদিন খোলা ছিল, তারা বসেননি। আলোচনার পথ তারাই বন্ধ করেছে।”

কবি নজরুল সরকারি কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান খন্দকার বলেন, “চলমান আন্দোলন শুধু বিএনপির নয়। বরং এ আন্দোলন সাধারণ মানুষের। প্রতিটি দল আন্দোলন সমর্থন করছেন। নিত্যপণ্যের দাম লাগাম ছাড়া, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। উসকানি দিয়ে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের সমঝোতা করার মানসিকতা দেখছি না।”

Link copied!