আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনা বা সংলাপের জন্য পথ খোলা রাখার বিষয় জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে সমন্বয়কারীরা আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে ফিরতে চায়। সেজন্য সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ ও সমাধানের পথ তৈরির প্রত্যাশা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিকেলে তিনটার দিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় সংসদ ভবনের টানেলের নিচে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। শিক্ষার্থীরা যখন চাইবে তখনই আলোচনা।” এ সময় মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত করার আহ্বান জানান।
সরকারের এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ তথ্য জানান। দৈনিক শিক্ষা এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। নাহিদ ইসলাম বলেন, “শহীদের রক্তের ওপর কোনো সংলাপ হবে না। সরকারকেই সমাধানের পথ বের করতে হবে।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহিংসতা চালিয়ে সরকার উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর দায় সরকারেরই। সরকার আলোচনার কোনো পরিস্থিতি রাখেনি। যদি এখনো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজপথ থেকে সরানো না হয়; যদি হল, ক্যাম্পাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেয়া হয়, যদি এখনো গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়কারী বলেন, ‘কেবল কোটা সংস্কার করলেই ফয়সালা হবে না। প্রথমে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে সরকার দাবি কর্ণপাত করেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার দিয়ে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা করছে। এখন সংলাপের নামে, দাবি আদায়ের নামে নতুন প্রহসন করছে।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘সকল ছাত্র হত্যার বিচার করতে হবে। ক্যাম্পাসগুলোকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়কারী শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের আজ রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার অথবা গুম করে ফেলতে পারে। আপনারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। সবাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিটা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করুন।’