সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ১০ বছরে নতুন পে-স্কেল না পাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষের মধ্যে ছিলেন। রবিবার (৯ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের মন্তব্য, যে নতুন পে-স্কেলের সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার, কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি করেছে।
সচিবালয় ও জেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, নতুন বছরের শুরুতেই নতুন পে-স্কেল কার্যকর করার অপেক্ষা করছিলেন তারা, যা তাদের বেতন দ্বিগুণ করার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে নতুন পে-স্কেল ঘোষণার আশায় কর্মকর্তারা দিনগুনছিলেন।
গত ২৭ জুলাই নতুন পে-কমিশন গঠন করা হয়, প্রধান করা হয় সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে। কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন পে-স্কেলে সরকারি চাকরিজীবীদের সুবিধা এবং বেতন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনা হওয়ার কথা ছিল। নতুন স্কেলে মূল বেতন দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম গ্রেডের সর্বোচ্চ বেতন দাঁড়াতে পারে ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, এবং ২০তম গ্রেডের সর্বনিম্ন বেতন হতে পারে ১৬,৫০০ টাকা।
সরকারি ব্যয় খাতে ইতিমধ্যে চাপ তৈরি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) সরকারি বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৮৪,৬৮৪ কোটি টাকা, যা নতুন পে-স্কেল কার্যকর হলে আরও ৬৫-৮০ হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে। পে-কমিশনের সদস্যরা জানিয়েছে, অতিরিক্ত অর্থের উৎস এবং রাজস্ব আহরণের বিষয়টি সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালে মুদ্রাস্ফীতি ৮.৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে। নতুন পে-স্কেল কার্যকর হলে এটি আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা আকবর হোসেন বলেন, “দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, বেতন নয়। নতুন পে-কমিশনের আলো দেখতে শুরু করেছিলাম, কিন্তু এখন হতাশ ও ক্ষুব্ধ।”
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, “অর্থ উপদেষ্টার এই বক্তব্য আমাদের আঘাত করেছে। সাধারণ কর্মচারীরা অনেকটাই ক্ষুব্ধ। আমরা নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ দেওয়ার কৌশল ভাবছি।”































