• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বাস টার্মিনালগুলোতে


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৩, ০৩:৪৩ পিএম
ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বাস টার্মিনালগুলোতে
মহাখালী বাস টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীদের আনাগোনা। ছবি- সংগৃহীত

বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর সপ্তম দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে দূরপাল্লার বাস চলাচল।

সরেজমিনে গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ বাড়ায় সময়মতো বাস ছাড়ছেন চালকরা। চাহিদা মতো যাত্রী পাওয়ায় লোকসান কমার আশা দেখছেন পরিবহন মালিকরা।

তারা বলছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে পরিবহন না চলায় বড় লোকসান হয়েছে। এরপর কর্মসূচি দীর্ঘ হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ছে। যেদিন রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি থাকে না, সেদিন পরিবহন চলাচলে লোকসান কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অচিরেই হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি বন্ধ না হলে পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পরিবহন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমাদের ইনকাম অর্ধেকে নেমেছে। না পারছি একেবারে বন্ধ রাখতে, না পারছি সড়কে পরিবহন নামাতে। সড়কে গাড়ি নামালে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের শঙ্কা থাকে। অর্ধকোটি টাকা দিয়ে পরিবহন কিনে অগ্নিসংযোগে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাবে, এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব। তাই আমরা চাই রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়।”

সরজমিনে গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের ভিড়। যাত্রী ডেকে ডেকে টিকিট বিক্রির হাঁকডাক আবারও ফিরেছে। সময়মতো বাস ধরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে টিকিট কাটতে ব্যস্ত সাধারণ যাত্রীরাও। তবে যেমনি আছে তাদের বাড়ি যাওয়ার আনন্দ, তেমনি আছে দুর্ঘটনার শঙ্কাও। কারণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জ্বালাও পোড়াও, ভাঙচুরের ঘটনাগুলো তাদের দুর্ঘটনার শঙ্কা তৈরি করেছে।

শ্যামলী পরিবহনের টিকিট কেটেছেন মো. সুজন মোল্লা। গন্তব্য রংপুর। সময়মতো বাস আসবে বলে টিকিট কাউন্টার থেকে বলা হয়েছে। বাড়ি যাওয়ার আনন্দে রয়েছেন তিনি, আছে দুর্ঘটনার শঙ্কাও।

সুজন মোল্লা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “অনেক দিন পর বাড়ি যাচ্ছি। একটু পর বাস আসবে। বাড়ি যাওয়ার যে কত আনন্দ আপনাকে বলে বোঝানো যাবে না। যদিও কিছুদিন আগে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। রাজনৈতিক কর্মসূচি চলমান থাকায় বাড়ি যাওয়া সম্ভব হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “হরতাল-অবরোধে যে পরিমাণ বাস ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে তাতে নিজের মধ্যে ভয় কাজ করছে। কোন সময় কোন দুর্ঘটনা আসে বলা মুশকিল। দিন যত যাচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হলেও নানা ভয় নিয়ে বের হতে হচ্ছে।”

শ্যামলী কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা একজন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “মঙ্গলবার কোনো অবরোধ না থাকায় যাত্রীরা ভিড় করছেন। আমরা সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করছি।”

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, “যাত্রীদের নিরাপত্তায় মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। গাড়ি ছাড়ার আগে আমরা বাসে যাত্রীদের ছবি তুলে রাখছি। আর সব সময় চালক সুপারভাইজারের সাথে যোগাযোগ রাখছি।”

মহাখালী বাস টার্মিনালেও যাত্রীদের আনাগোনা দেখা যায়। হরতাল-অবরোধে অনেকটাই যাত্রীশূন্য মহাখালী বাস টার্মিনালে সব কাউন্টারেই চলছে টিকিট বিক্রির কাজ। এছাড়াও সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে দেখা গেছে।

জলসিঁড়ি কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা একজন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সকালের চেয়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। আমরা আশা করছি অবরোধে যে ক্ষতি হয়েছে সেটা যেন ধীরে ধীরে পুষিয়ে নিতে পারি।”

মহাখালী থেকে টাঙ্গাইল ছেড়ে যাওয়া তুহিন সুপার বাসের এক যাত্রী বলেন, “বাড়ি যেতে পেরে আনন্দ লাগছে। অনেক দিন পর বাড়ি যাচ্ছি। সময় মতো বাস আসছে। তবে টিকিটের দাম আর একটু কম হওয়া দরকার।”

Link copied!