• ঢাকা
  • শনিবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে নির্বাচনী আমেজ, বিএনপি অফিসে তালা


রাসেল হোসাইন
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৩, ০৫:৪২ পিএম
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে নির্বাচনী আমেজ, বিএনপি অফিসে তালা

দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন। অপর দিকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। এবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হতে দলীয় নেতা, সাংবাদিক, ক্রিকেটার, শোবিজ তারকা, ব্যবসায়ীসহ অনেকেই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন।

তফসিল ঘোষণার পর মানুষের মধ্যে গণজাগরণ শুরু হয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবারের নির্বাচনে মানুষ আনন্দের সঙ্গে ভোট দেবে বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “নেতাকর্মীদের বিচরণ, উৎসাহ, আন্দোলন, সংগ্রাম-লড়াই, ত্যাগ-তিতিক্ষা, সবকিছুতেই আওয়ামী লীগের ঠিকানা হলো বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। যে কারণে এই জায়গাটিতে এত মানুষের আগমন। অনেকে আসছে কেমনভাবে মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়, তা দেখার জন্য বা কারা কেনেন তা জানার জন্য। আবার অনেকে আসে উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য। এতে প্রমাণিত হয় দেশের মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য খুব আগ্রহে রয়েছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশের মানুষ গণজাগরণের ঢেউ তুলেছেন। নির্বাচন নিয়ে জনগণের আগ্রহ প্রবল। মানুষ নির্বাচন নিয়ে কতটা স্বতঃস্ফূর্ত এটা আজকে বলার অপেক্ষা রাখে না।”

এদিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে নির্বাচনী আমেজ দেখা গেলেও একেবারে সুনশান নীরবতা দেখা গেছে নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে। বর্তমানে বিএনপির দলীয় কার্যালয়টি তালাবদ্ধ রয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে একের পর এক হরতাল, অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।  

একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় দলগুলো। এ ইস্যুতে পৃথক কর্মসূচি পালনও করছে তারা।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, কোনো ধরনের সমঝোতা ছাড়াই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল আরও একটি একতরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে রাজপথে চলমান আন্দোলন আরও জোরদার করতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না, তাদের অবস্থানে অনড় থাকার বিষয়ে বিএনপি নানাভাবে কাজ করছে। সরকারের লোভ-চাপের কাছে নতিস্বীকার করে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর কোনো নেতা যেন নির্বাচনে অংশ না নেন, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, “আমরা সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করে যাচ্ছি। এদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সেই আন্দোলনে সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছেন তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আছি।”

অপর দিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না জানালেও মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়।

দলটির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলীয় মনোনয়ন বিক্রি শুরু হলেও দলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলটির যদি নির্বাচনী ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত ঠিক মনে হয় তাহলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। সেজন্যই তারা নির্বাচনী সব প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী দল। আমরা নির্বাচনের প্রক্রিয়া আরম্ভ করেছি, কিন্তু এটা আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করতে হয়, আমরা করছি।”

নির্বাচনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কে দেবেন এবং কবে দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা একটা পরিবেশ আশা করেছিলাম যে, আস্থা আসবে আমাদের এবং ভোটারদের—নির্বাচনটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সে আস্থা পুরোপুরি এখনো আমাদের মধ্যে আসেনি। আমাদের দলের চেয়ারম্যানকে সংগঠনিক সব স্তর থেকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, উনি নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”

Link copied!