বিএনপি নির্বাচন চায় না, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “বিএনপি সন্ত্রাসী দল, তাদের যেভাবে শিক্ষা দিতে হয় সেভাবেই দেবো।”
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের মানুষের জীবনে যেন অগ্নিসন্ত্রাসের মতো ঘটনা আর না আসে। তারা (বিএনপি) আন্দোলন করছে ঠিক আছে, কিন্তু তারা এখনো বাসে-গাড়িতে আগুন দিচ্ছে। আমি বলে দিয়েছি, যারা আগুন দিতে যাবে; সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তায় যারা থাকবে বা গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে বলেছি, সবার ক্যামেরা অন থাকবে। যদি কেউ এরকম করতে চায় সঙ্গে সঙ্গে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে। কোনোভাবেই যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “২৮ অক্টোবর বিএনপি নিজেরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে তারাই আবার অবরোধের ডাক দিয়েছে। তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আবার অবরোধের ডাক দিল। কীসের অবরোধ? এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নেই। যতই ভালো ব্যবহার করি। অস্ত্রধারীদের হাতে এদের জন্ম। এরা নির্বাচন চায় না। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করতে চায়।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২৮ তারিখ পুলিশকে যেভাবে হত্যা করল। সাংবাদিকদের ওপর হামলা, অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে, ফিলিস্তিনে যেভাবে ইসরায়েলিরা হামলা করল ঠিক সেভাবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা তো সারা জীবন আন্দোলন করেছি। তারপর ক্ষমতায় এসেছি। তারাও যেতে চাচ্ছে। কিন্তু এই ধরনের মানুষের ক্ষতি করা, এটা যেন করতে না পারে। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন।”
স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তিন বছরের পরিবর্তে ৬ বছরের জন্য বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস বাণিজ্য সুবিধা প্রদানেরও অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বেলজিয়াম সফরের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “সফরের প্রথম দিন ইউরোপীয় কমিশনের বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক হয়। সেখানে ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের অংশীদারিত্বের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়। আগামীতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।”
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা বিশ্বনেতাদের
বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে ২০৩২ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত প্রবেশ দাবি তুলে শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অবরোধ ও পাল্টা অবরোধের কারণে অর্থনৈতিক অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি স্বল্পোন্নত দেশ। এসব দেশকে এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তিন বছরের পরিবর্তে ৬ বছরের জন্য বাণিজ্য সুবিধা ২০৩২ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে ইউরোপের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছি।”
বৈঠকে ইইউ দেশগুলোকে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আইসিটিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বাণিজ্য সুবিধার বিষয়ে আরও আলোচনার বিষয়ে মত দেন।”
এর আগে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন।
সফরে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।