তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক আমরা তা কোনোভাবেই চাই না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থায়িত্ব ৩ মাসের বেশি হওয়া উচিত না এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাদের এখতিয়ারে থাকা উচিত না।”
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান বিষয়ভিত্তিক সংলাপে অংশ নিয়েছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
সংলাপের বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত হবে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে, এমন বিধান রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “কমিশনের সুপারিশ ছিল, আস্থা ভোট, অর্থবিল ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিল বাদে বাকি সমস্ত বিষয়ে জাতীয় সংসদের সদস্যরা স্বাধীন থাকবেন। কিন্তু আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে আমরা এই তিনটি বিষয় ছাড়াও জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়কে এখানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছি।”
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাষ্ট্রে যদি কোনো কারণে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়, তবে জাতীয় সংসদে অবশ্যই এ বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুধু সরকারি দল নয়, সমস্ত দলকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেই জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।”
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, “সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি ছাড়া অন্য দুই বিষয়ে প্রায় সবাই-ই একমত হয়েছেন। কেউ কেউ বিস্তারিত আলাপের জন্য সময় চেয়েছেন। এই তিনটা বিষয়ে যদি একমত হওয়া যায়, তবে আমরা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টা আলাদাভাবে উপস্থাপন করব এবং আমাদের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোতে এটা থাকবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো নিয়েও স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হোক চাই না। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থায়িত্বের সময় ৪ মাস প্রস্তাব করেছিলেন। আমাদের দলীয় মত হচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থায়িত্ব তিন মাসের বেশি হওয়া উচিত না এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাদের এখতিয়ারে থাকা উচিত না।”
সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব সম্পর্কেও মত দেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “তাদের প্রস্তাবনা ছিল সব স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের হবে। এটা বাস্তবতা বহির্ভূত। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে হতে পারে, কিন্তু সবাই যদি বিরোধী দল থেকে হয়, তবে সরকার তার কার্য পরিচালনা করতে সবসময় বাধাগ্রস্ত হবে।”