সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী সপ্তাহে অমর একুশে গ্রন্থমেলার সময়সীমা বাড়ার সিদ্ধান্ত আসছে বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে সেই সময়সীমা। তবে এখনো সেটি চূড়ান্ত নয় বলে জানান মেলার আয়োজক কমিটি।
বৃহস্পতিবার বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে বাড়ানো হবে বইমেলার সময়। কোভিডের কারণে এবার বইমেলার সময়সীমা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। এখন যেভাবে করোনার সংক্রমণ কমছে, সেভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে হয়তো আমরা মেলার সময়সীমা খানিকটা বাড়াতে পারবো।’’
সময়সীমা কত দিন বাড়ানো হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে জালাল আহমেদ বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে সব মহলের সঙ্গে বৈঠক করে মেলার সময় বাড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ফলে পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’’
এদিকে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন প্রকাশককেও ফেসবুকে এ বিষয়ে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায়।
বিদ্যাপ্রকাশের প্রকাশক মজিবর রহমান খোকা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বইমেলার সময় বাড়ানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে পোষণ করেছেন। তার মানে আমরা ধরেই নিতে পারি, এটা কার্যকর হবে। বিভিন্ন মহল থেকে শুনেছি, মেলা ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হবে।”
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে চিরায়ত নিয়মে মেলা শুরুর কথা থাকলেও বিশ্বব্যাপী অমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু হয়েছে, যা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় বাড়বে মেলার সময়। এই ঘোষণার পর শুরু হয় পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের মনে জল্পনা-কল্পনা।
এবার বইমেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ‘কোভিডমুক্ত বাংলাদেশ চাই’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বইমেলার সময়সীমা বাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘‘বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমছে, যদি আরও কমে তাহলে হয়তো আমরা মেলার সময়সীমা বাড়াতে পারবো।’’
মেলার আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায় , মেলায় সার্বক্ষণিক আমাদের একটি মোবাইল কোর্ট থাকবে। যেন গেটে মাস্ক পরে ঢুকে মেলার ভেতরে কেউ মাস্ক ছাড়া থাকতে না পারে। প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিকে বলা হয়েছে, প্রতিটি দোকানে ‘নো মাস্ক, নো সেল’ ব্যানার থাকবে। রেস্টুরেন্টে কোভিড সংক্রমণ বাড়ে। তাই মেলার খাবারের দোকানে ঢুকতে হলে সবার অবশ্যই টিকা সনদ থাকতে হবে। এরই মধ্যে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাবার আয়োজকদের বলা হয়েছে, তাদের আঙিনায় যেন কেউ টিকা সনদ ছাড়া ঘুরতে না পারে।
এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি স্টল এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি বইয়ের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারের মেলায় প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৫। তবে গত বছরের তুলনায় এবার বইয়ের স্টল সংখ্যা কমেছে। গত বছর বইয়ের স্টল সংখ্যা ৮৩৪টি। কিন্তু এবার বেড়েছে প্যাভিলিয়নের সংখ্যা। গত বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৩টি, যা এবার বেড়ে ৩৫টি হয়েছে। এছাড়া লিটলম্যাগের স্টল রয়েছে ১২৭টি।