দুই হাজার বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের এক গ্রাম নাসারাতে ঘটে অলৌকিক ঘটনা। ঈশ্বর প্রেরিত স্বর্গদূত কুমারী মারিয়াকে জানিয়ে দেন ঈশ্বরের আশীর্বাদে তার গর্ভে জন্ম নেবে এক মহামানবের। তার নাম হবে যীশু। মানবসমাজকে সত্য পথে পরিচালিত করা ও স্বর্গের পথ দেখানোই হবে তাঁর কাজ। তিনি হবেন মানবজাতির নতুন রাজা।
এই খবরে বিচলিত হয়ে পড়ে রোম সম্রাট। সকল নবজাতককে হত্যা করার হুকুম দেয়া হয়। ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে গর্ভাবস্থায় স্বামী যোসেফকে নিয়ে মারিয়া বেরিয়ে পড়েন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। শেষ পর্যন্ত তাদের আশ্রয় মেলে বেথলেহেমের এক গোয়াল ঘরে। সেখানেই জন্ম হয় যীশুর। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, বিশ্বজুড়ে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই আগমন হয়েছিল তার।
ইতিহাস খুঁজে দেখা যায় প্রাচীন যুগের দিনপঞ্জিকাতে ২৫ ডিসেম্বর মেরির সন্তান জন্মদানের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। ৩৫৪ সালের রোমান পঞ্জিকাতেও ২৫ ডিসেম্বর যীশুর জন্মদিন উল্লেখ করা হয়। তাই মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপসহ অনেক অঞ্চলে এই দিনটি মেরি ক্রিস্টমাস হিসাবে উদযাপন হয়। এরপর অন্যান্য দেশও এই ধর্মীয় উৎসব পালন শুরু করে।
আঠার শতকের শেষ দিকে ভারতবর্ষে বড়দিন পালনের চর্চা শুরু হয়। একই সঙ্গে ইউরোপীয়দের অনুকরণে জন্মদিন পালনও শুরু করেন অনেকে।
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সর্বপ্রথম যিশুর জন্মোৎসবকে ‘বড়দিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। যিশুখ্রিষ্টের আগমনের মাহাত্ম বিবেচনায় এই দিনটি ‘বড়দিন’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।
খ্রিষ্ট ধর্মমতে, যিশুখ্রিষ্ট পৃথিবীতে এসেছিলেন সব পাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে আর সবার বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে। তার এই আগমনকে স্মরণ করে খ্রিস্টানরা শ্রদ্ধা ভালোবাসায় বিশ্বব্যাপী জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করেন বড়দিন।