২১শে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালি জাতির গৌরবের দিন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়। দিনটিতে অন্তরের অন্তরস্থল থেকে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাঙালিরা। ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। বাদ যায় না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাড়া-মহল্লায় বানানো শহীদ মিনারও। সবস্থানেই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
ভাষা দিবসের এই আমেজ থাকে পরিবারেও। শোকের এই দিনটিতে মন ভার হয়ে থাকলেও বাঙালির মুখে থাকে গৌরবের চিহ্ন। বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি অর্জনের গৌরব থাকে বাঙালির চোখে-মুখে। প্রিয় সন্তানকেও ভাষা আন্দোলনের সেই দিনের কথা জানান। শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শেখান।
দিনটিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পোশাকেও কালো রং ধারণ করে পরিবারের সদস্যরা। ছোট-বড় সবার গায়ে থাকে সাদা-কালো রঙের পোশাক। সকালে ঘুম থেকে উঠে দল বেধে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়। ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মরণ করা হয়। তাদের আত্মত্যাগের জন্য় কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
দিনটি সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সবাই একসঙ্গেই পালন করতে পারেন। ঘরেই ভালো খাবারের আয়োজন থাকে। অনেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বাইরেই খাওয়া-দাওয়া সেরে নেন।
অনেকে বিশেষ এই দিনে পরিবারকে নিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলাও ঘুরে আসেন। মেলা প্রাঙ্গনে দেখা হয়ে যায় প্রিয় লেখকের সঙ্গে। প্রিয় লেখকের বইটি কিনে নিয়ে নেন তার স্বাক্ষর। প্রিয় মুহূর্তটিকে ক্যামেরা বন্দিও করে রাখেন। এভাবেই স্মরণীয় করে রাখেন বিশেষ এই দিনটিকে।
পরিবারে কোনো সদস্য যদি মুক্তিযোদ্ধা হোন তবে দিবসটি তাদের আরও ঘটা করে পালিত হয়। কারণ একাত্তরের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয় ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই। মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সেই দৃশ্যগুলো খুব কাছ থেকে দেখে এসেছেন। নতুন প্রজন্ম হয়তো সেই গল্প শুনেই বড় হয়েছেন। তাই দিনটি তাদের কাছে আরও বেশি শ্রদ্ধার।