• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এক বছরের বেশি টেকে না পরকীয়া প্রেম!


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২১, ০২:২৯ পিএম
এক বছরের বেশি টেকে না পরকীয়া প্রেম!

বিশ্বজুড়ে বিয়ের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যাও। দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার এই সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই দায়ী পরকীয়া প্রেম। কিন্তু সুখী সংসারে ফাটল ধরানো সেই পরকীয়া প্রেমের স্থায়িত্বও খুব একটা বেশি নয়। গবেষণা বলছে, বেশির ভাগ পরকীয়াই বড়জোর এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনি তথ্য তুলে ধরেছেন মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার। দীর্ঘ আট বছর পরকীয়া প্রেম নিয়ে গবেষণার পর তিনি তার গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

দ্য ইকোনমিক টাইম ও স্ট্যাটিস্টা ডট কমের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকারের গবেষণা অনুযায়ী, পরকীয়া প্রেম দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনে অশান্তি ডেকে আনাসহ বিবাহবিচ্ছেদের মতো ঘটনায় গড়ালেও খুব কম ক্ষেত্রেই এটি পরিণতি পায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরকীয়া প্রেম টেকসই হয় না। শতকরা ৫০ শতাংশের বেশি পরকীয়া প্রেম বড়জোর এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা এক বছর তিন মাস বা তার কিছু বেশি সময় পর্যন্ত টেকে। দুই বছরের বেশি স্থায়ী হয় শতকরা ৩০ শতাংশ পরকীয়া প্রেম। বিবাহ বন্ধন পর্যন্ত গড়ায় মাত্র পাঁচ শতাংশের কম সম্পর্ক।

গবেষণায় আরও বলা হয়, ব্যক্তিগত জীবনে একঘেয়েমি থেকেই পরকীয়ায় জড়ান বেশির ভাগ মানুষ। নিঃসন্তান দম্পতির চেয়ে যাদের সন্তান আছে তারাই পরকীয়া প্রেমে বেশি জড়ান।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ১০ পেশার মানুষ বেশি পরকীয়া প্রেমে জড়ায়। এর মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে সামাজিক কাজ করে এমন পেশার মানুষরা। তারপরই আছে শিল্প ও বিনোদন অঙ্গনের মানুষরা। এছাড়া শিক্ষাক্ষেত্র, আইন পেশা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, চিকিৎসাক্ষেত্র, মার্কেটিং, সাংবাদিকতা, ফিন্যান্সের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও উচ্চবিত্তরা পরকীয়া প্রেমে বেশি জড়ান। তবে রাজনীতিবিদরা এই তালিকার ওপরের সারিতে নেই।

এছাড়া পরকীয় প্রেমে জড়ানো শীর্ষ ১০ দেশের তালিকা করেছেন প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার। এই তালিকায় সবার ওপরে আছে থাইল্যান্ড। এই দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অর্ধেকের বেশি বিবাহিত মানুষ জানিয়েছেন, তাদের পরকীয়া সম্পর্ক আছে। থাইল্যান্ডের পরের স্থানেই আছে ডেনমার্ক। এরপর জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নরওয়ে, স্পেন, ফিনল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য।

তবে প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার তার গবেষণায় শুধু পরকীয়া প্রেমের কুফল সম্পর্কেই তুলে ধরেননি। বরং পরকীয়া প্রেমের কিছু সুফলও আছে বলে জানিয়েছেন। তিনি তার গবেষণায় জানান, পরকীয় প্রেম অনেক সময়ই পারিবারিক জীবনে ভারসাম্য আনতে সাহায্য করে। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, পরকীয়া প্রেমে জড়ালে দম্পতির মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এর ফলে স্বামী-স্ত্রী নিজেদের দাম্পত্য জীবনে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করতে পারেন এবং তা দূর করারও সুযোগ পান।

এছাড়া পরকীয়া প্রেমে জড়ালে অনেক সময় ব্যক্তির মনে অপরাধবোধ জন্মায়। তখন দাম্পত্য জীবনে বিপরীত মানুষটির ছোটখাটো দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করার মানসিকতা তৈরি হয়। পরকীয়া প্রেম ব্যক্তির মন ভালো করতে সাহায্য করে। ফলে অনেক সময় সংসারে অশান্তি কমে।

পরকীয়া প্রেমের ফলে দাম্পত্য জীবন আগের চেয়ে ভালো হয়েছে এমন সংখ্যাও কম নয় বলে গবেষণায় জানিয়েছেন প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার।

Link copied!