• ঢাকা
  • সোমবার, ০২ জুন, ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৫ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ইশরাকের নামাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে পড়তে হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
ইশরাকের নামাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে পড়তে হয়
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে অন্যতম ইবাদত নামাজ। যার মাধ্যমে বান্দা সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। মুসলিমদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ। এছাড়াও রয়েছে নফল নামাজের গুরুত্ব। যা বান্দার অতিরিক্ত সওয়াব অর্জনের মাধ্যম। এর মধ্যে একটি বিশেষ নফল নামাজ হলো ইশরাকের নামাজ। অনেক মুসলিম বান্দা এই নামাজের ফজিলত  সম্পর্কে অবগত নন। অথচ ছোট এই নামাজের মাধ্যমে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়।

সালাতুল ইশরাক বা ইশরাকের নামাজ। নফল এ নামাজ বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে পড়তেন এবং অন্যকে পড়তেও বলতেন। মহানবী এ নফল নামাজের চমৎকার ফজিলতও বর্ণনা করেছেন।

ইশরাকের নামাজের ফজিলত?

ইশরাক শব্দের অর্থ আলোকিত হওয়া। সূর্য উঠার পর জগত আলোকিত হয়। এ সময় হাদিসে যে নামাজের ইঙ্গিত পাওয়া যায় তাকেই সালাতুল ইশরাক বলেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এ নামাজ পড়তেন না। বরং একটু সময় নিয়ে ভোরের আলো উঠার পর  ইশরাকের নামাজ আদায় করতেন। 

এ নফল নামাজের ফজিলত একাধিক হাদিসে উঠে এসেছে। হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি ফজর নামাজ জামাআতে আদায় করার পর সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত ওখানে বসে বসেই আল্লাহর জিকির করে। তারপর দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে। তার জন্য পূর্ণাঙ্গ হজ ও ওমরার সমান সাওয়াব রয়েছে।" (তিরমিজি, মিশকাত)

হজরত আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "এক নামাজের পর (ধারাবাহিক) আর এক নামাজ; যার মাঝখানে কোনো গোনাহ হয়নি, তা ইল্লিয়্যুন (উচ্চ মর্যাদায়) লেখা হয়।" (আবু দাউদ)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি জামাআতের সঙ্গে ফজরের নামাজ পড়ল। অতপর সূর্য উঠা পর্যন্ত সেখানে বসে আল্লাহর জিকির করল; অতপর দাঁড়িয়ে দুই রাকাআত নামাজ পড়ল; সে একটি হজ ও ওমরাহ করার সাওয়াব নিয়ে ফিরে গেল।" (তাবারানি, আত-তারগিব)

ইশরাকের নামাজ আদায়ের সময়

এই নফল নামাজ ফজরের নামাজ শেষে সূর্য ওঠার পর কিছু সময় অপেক্ষা করে আদায় করা হয়। 
ইশরাক নামাজের সময় নির্ভর করে সূর্য ওঠার উপর। সাধারণত সূর্যোদয়ের ১২-১৫ মিনিট পরে ইশরাক নামাজের সময় শুরু হয়। এই সময় দোহা নামাজের শুরুর সময় হিসেবেও বিবেচিত। সময় শেষ হয় জওয়ালের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অর্থাৎ যখন সূর্য মধ্যাকাশে পৌঁছাতে শুরু করে।

যদি সূর্যোদয় হয় সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে, তাহলে ইশরাকের নামাজ পড়া যাবে ৫টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু করে প্রায় ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত।

ইশরাক নামাজের নিয়ম 

সর্বনিম্ন ২ রাকাত পড়তে হবে। কেউ চাইলে ৪ রাকাতও পড়তে পারেন (২+২ করে)। ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে হবে। এরপর মসজিদে বা ঘরে বসে জিকির, তাসবিহ, কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদিতে সময় কাটাতে হবে। সূর্য ওঠার পরে ১২ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে, এরপর ২ রাকাত নামাজ নফল ইশরাকের নিয়তে আদায় করতে হবে।

নিয়ত:“আমি ২ রাকাত নফল ইশরাক নামাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আদায় করছি”।
প্রতিটি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর যেকোনো সূরা মিলিয়ে পড়া যাবে।

ইশরাক নামাজ নেকি লাভের সহজ মাধ্যম। এ  নামাজ সহজ, অল্প সময়সাপেক্ষ। কিন্তু এর মাধ্যমে এক বিশাল সওয়াব অর্জন সম্ভব। যাদের হজ করার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য এটি যেন হজের বিকল্প সওয়াব অর্জনের উপায়।

হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন: "হে আল্লাহ, আমার উম্মতের সকালকে বরকতময় করে দাও।”(আবু দাউদ) তাই দিনের শুরুতে ইশরাক নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি বরকতপূর্ণ দিনের দোয়ার অন্তর্ভুক্ত হন।

Link copied!