• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কেন জীবন্ত বিষধর সাপ খায় উট?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৪, ০৩:২৫ পিএম
কেন জীবন্ত বিষধর সাপ খায় উট?

শান্তশিষ্ট নিরিহ প্রাণী উট। মরুভূমির বুকে একমাত্র বাহন। উটে চড়ে নিয়মিত যাত্রা করেন কত মানুষ। ক্লান্তহীন হয়ে সারাদিন হেঁটে কত মানুষকে গন্তব্যে পৌছে দেয়। নিরিহ এই প্রাণীটির খাবার হচ্ছে বিষধর সাপ। অবাক হচ্ছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে উটকে বিষধর সাপ খাওয়ানো হয়। কিন্তু কেন খাওয়ানো হয় জানেন?

প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এক প্রানী অন্য প্রানীকে ভক্ষণ করতেই পারে। কিন্তু তা অধিকাংশই হয় মৃত। তবে উট জীবন্ত কিং কোবরার মতো বিষধর সাপ গিলে ফেলে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উটকে সাপ খাওয়ানোর ভিডিও প্রকাশ পায়। যা অবাক করেছে নেটিজেনদের। যদিও বিষধর সাপ খাওয়ার পেছনে কারণ রয়েছে।

জানা যায়, উটদের অদ্ভুত এক রোগ হয়। এই রোগের নাম ‘হায়াম’। এটি স্থানীয় শব্দ। যার অর্থ জীবন্ত সাপ গিলে ফেলা। এই রোগে আক্রান্ত হলে উট খাওয়া বন্ধ করে, শরীর ফুলে শক্ত হয়ে যায়, রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, গর্ভপাত হওয়া এবং মৃত বাচ্চা প্রসবের মতো জটিলতা দেখা দেয়। উট সারাক্ষণ সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে এবং একসময় নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই রোগের চিকিৎসা করতেই বিষধর সাপ খাওয়ানো হয় উটকে।

স্থানীয়দের ধারণা, এই বিরল রোগের একমাত্র চিকিৎসা হলো হায়াম। জীবন্ত সাপের বিষ খেয়েই উটের শরীরে থাকা বিষকে নির্মূল করা হয়। আক্রান্ত উটের মুখে জীবন্ত সাপ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মুখে পানি ঢেলে দিলে উট সাপ গিলে ফেলে। সাপের বিষ সারা শরীরে ছড়াতে শুরু করে। তখলই উটের তৃষ্ণা পায়। প্রচুর পানি পান করে। ছয় থেকে আট ঘণ্টায় প্রচুর পানি করে উট। এরপর একসময় বিষক্রিয়ার ফলে উটের চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই উট পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়। উটের চোখ থেকে যে পানি বের হয় তার নাম তিরইয়াক। এটিও সংরক্ষণ করে রাখা হয়। কেননা স্থানীয়রা বিশ্বাস করে, তিরইয়াক পানে সাপ ও অন্যান্য বিষাক্ত পোকামাকড় দংশন থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।

এদিকে হায়াম রোগের নিরাময় হিসেবে সাপ খাওয়ার এই ধারণা বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, উটের পরিপাকতন্ত্র অত্যন্ত শক্তিশালী। তাই উট সাপকে সহজেই হজম করতে পারে। তাছাড়া মরুভূমির মতো প্রতিকূল পরিবেশে উট সাপের চেয়েও বিষাক্ত খাবার বা প্রাণী খেয়ে বাঁচে। তাই বিষধর সাপ খাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনো উপকারিতাও প্রমাণ হয়নি। তাই স্থানীয়দের এমন ধারণা কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।

Link copied!