রেস্তোরাঁয় খেতে গেলে যা করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৩, ০২:৫৫ পিএম
রেস্তোরাঁয় খেতে গেলে যা করবেন
রেস্তোরাঁ এখন অন্যতম আকর্ষণের জায়গা । ছবি : সংগৃহীত

আজকাল রেস্তোরাঁ মানেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অন্যতম কেন্দ্রস্থল। এছাড়া দৈনন্দিন জীবনে সপ্তাহে বা মাসে দুয়েকবার তো যাওয়া হয়ই। কেউ কেউ তো মন খারাপ হলেই চট করে চলে যান পছন্দের কোনো রেস্তোরাঁয়। বসে খেয়ে নেন কফি বা পছন্দসই যেকোনো খাবার।

অন্যদিকে বন্ধুবান্ধবসহ হৈ হৈ করে খাওয়া তো আছেই। মোট কথা, রেস্তোরাঁ আমাদের জীবনে এখন অন্যতম আকর্ষণের একটি জায়গা। তবে অনেক সময় আমরা না বুঝে রেস্তোরাঁয় নানা ধরনের অস্বস্তিকর আচরণ করে ফেলি। 

কিন্তু এ কথাও ভুললে চলবে না যে, সব ক্ষেত্রে যেমন একটা শৃংঙ্খলার বিষয় থাকে। রেস্তোরাঁরও রয়েছে তেমন কিছু নিয়মকানুন। যা আমাদের সবারই মেনে চলা উচিত। যেটি করা একদমই ঠিক নয়। 

যে রেস্তোরাঁতেই আপনি খেতে যান না কেন, এসব আদবকেতা মেনে চললে আপনার ব্যক্তিত্ব বজায় থাকবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো কী-
 

১. রেস্তোরাঁয় ঢোকা মাত্রই যেকোনো আসনে চট বসে যাবেন না। রেস্তোরাঁকর্মী এগিয়ে এসে আপনাকে নির্ধারিত টেবিল দেখিয়ে দিলে তবেই বসুন। আর আগে থেকে টেবিল বুক করা থাকলে ম্যানেজারকে জানান। আপনার কেমন টেবিল পছন্দ সেটিও জানাতে পারেন।

২. আপনি যদি অতিথি হিসেবে রেস্তোরাঁয় গিয়ে থাকেন, তাহলে রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করে আগে হোস্টের নাম উল্লেখ করুন। তখন ম্যানেজার আপনাকে জানিয়ে দেবেন তিনি এসেছেন কি না।

৩. অতিথি হিসেবে গেলে অবশ্যই সময়মতো আসার চেষ্টা করুন। হোস্টকে রেস্তোরাঁয় অপেক্ষায় রাখবেন না। বিশেষ করে ব্যস্ত রেস্তোরাঁয় হোস্ট অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। কোনো বিশেষ কারণে দেরি হলে হোস্টকে আগে থেকে বিষয়টা ফোন করা জানিয়ে দিন। এতে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষও অবগত থাকবেন।

৪. রেস্তোরাঁয় ঢোকার পর থেকেই মনে রাখবেন, রেস্তোরাঁর সবাই কমবেশি আপনাকে খেয়াল করছেন। কখনো ভাববেন না রেস্তোরাঁর কর্মীরা আপনাকে খেয়াল করেননি। তাই আরাম করে বসুন। টেবিল চাপড়ে, শিস দিয়ে, কিংবা ওয়েটার বলে ডাকবেন না। কারণ কিছু সময় পর তারাই আপনার কাছে অর্ডার জানতে আসবেন।

৫. খাবারের আগে ড্রিংকস অর্ডার দিন। আপনি যা খেতে পছন্দ করেন, তাই অর্ডার করুন। যদি খাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, তাহলে অন্যকে দেখে খাবার অর্ডার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি মেনু দেখে বুঝতে না পারেন, ওয়েটারকে ডেকে জিজ্ঞেস করতে দ্ব্বিধা করবেন না। কোনো বিষয়ে কনফিউশনে থাকলে ওয়েটারের পরামর্শ নিন।

৬. শিশুরা স্বভাবতই চঞ্চল হয়। যদি শিশুকে সঙ্গে নিয়ে যান তাদের প্রতি খেয়াল রাখুন।

৭. আপনি যদি অতিথি হয়ে যান, তাহলে অর্ডার দেওয়ার সময় একটু সচেতন থাকতে হবে। খুব বেশি দামি খাবার অর্ডার না দেওয়াই ভালো। মোটামুটি দাম বুঝে অর্ডার করুন।

৮. যদি কাউকে রেস্তোরাঁয় নিমন্ত্রণ করে থাকেন, তাহলে অর্ডার দেওয়ার আগে অতিথির জন্যে অপেক্ষা করুন। কারো যদি অতিরিক্ত দেরি হয়, তাহলে অন্য অতিথি থাকলে তাদের অর্ডার করতে বলতে পারেন, তবে আপনি অবশ্যই অপেক্ষা করবেন।

৯. রেস্তোরাঁয় গিয়ে জোরে কথা বলা বা হাসা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন, আপনি ছাড়াও অনেকে রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছেন। তারা বিরক্ত হতে পারেন।

১০. প্রতিটি রেস্তোরাঁর কিছু পিক আওয়ার এবং কিছু অফ-পিক আওয়ার থাকে। পিক আওয়ারে সাধারণতই কাস্টমারের বেশ চাপ থাকে। এই সময় খাবার তৈরি হতে খানিকটা দেরি হতেই পারে। এই বিষয়টি আপনাকে মেনে নিতে হবে। খাবার দিতে দেরি হলে খারাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

১১. অনেক সময় পরিবেশন করতে খাবার খানিকটা ঠান্ডা হয়ে গেলে খারাপ ব্যবহার করা উচিত নয়। অন্যদিকে, খাবার অনেক সময় ওভেন কিংবা উনুন থেকে সরাসরি নামিয়ে পরিবেশন করা হয় বলে খানিকটা গরম থাকে, তা নিয়েও রেস্তোরাঁকর্মীকে কিছু বলতে যাবেন না।

১২. যদি চামচ মাটিতে পরে যায় বা টেবিলে কোনো খাবার পড়ে যায়, তাহলে ব্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। ওয়েটারকে ডেকে আপনার সমস্যার কথা বলুন।

১৩. যদি রেস্তোরাঁয় চেনা কারো সঙ্গে দেখা হয় তাহলে তাত্ক্ষণিক উঠে গিয়ে কথা বলা জরুরি নয়। বরং দূর থেকে হাত নাড়তে বা হাসতে পারেন। উঠে গিয়ে কথা বললেও, বেশি সময় তাদের টেবিলে কাটাবেন না।

১৪. বিল দেওয়ার সময় নিজের মানিব্যাগ থেকে টাকা সাবধানে বের করুন। সবাইকে  দেখিয়ে বিল দেবেন না। আপনি যদি অতিথি হন, তাহলে হোস্টকে কত বিল হয়েছে এধরনের প্রশ্ন করবেন না। এটা রীতিমতো অভদ্রতা।

১৫. যদি আপনার খাওয়া-দাওয়া বা সেবা পছন্দ না হয় ওয়েটারকে জানাতে পারেন। তাতে যথাযথ উত্তর না পেলে, ম্যানেজারকে জানাতে পারেন।

১৬. রেস্তোরাঁয় কোনো অভিযোগ ভদ্রভাবে বলুন, কোনো রকম সিনক্রিয়েট করবেন না।

১৮. রেস্তোরাঁয় রেস্তোরাঁকর্মী কমবেশি টিপস আশা করেন। তবে খুবই সামান্য পরিমাণে  টিপস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি সে সময় আপনার সম্মানজনক টিপস দেওয়ার সামর্থ না থাকে, তবে টিপস দিবেন না। 

কারণ আপনি টিপস না দিলেও তিনি আপনাকে নিয়ে বিরূপ কোনো ধারণা পোষণ করবেন না। বরং আপনি যদি অসম্মানজনক টিপস দেন, তাহলে আপনার বিষয় তার মনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হতে পারে।

Link copied!