আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এই ঈদে মহান আল্লাহতায়ালার সন্তষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট পশু জবেহ করা হয়। ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ইবাদত। এই ইবাদত সামার্থ্যবান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। কিন্তু অনেকেই জানেন না, ঠিক কত টাকা হলে একজন মুসলমানের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
কোরআন ও হাদিস দ্বারা কোরবানি ওয়াজিব হওয়া প্রমাণিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো।’ (সুরা : কাউসার, আয়াত : ২)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১২৩)
প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকিম ব্যক্তি, যে ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তার ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব হবে।
নেসাব হলো: স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি। আর অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ।
ইসলামের ভাষায় সামর্থ্যবান বলতে বোঝায় যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে। নিসাবের অর্থ, যার কাছে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রুপা আছে, সে-ই নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। একইভাবে যার কাছে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস আছে, যার মূল্য সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ বা বেশি হয়, সে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।
কারও কাছে যদি এই পরিমাণ স্বর্ণ, রৌপ্য বা টাকাপয়সা না থাকে, যেগুলো কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ হয়, কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৮/৪৫৫)
যেমন কারও কাছে কোরবানির দিনগুলোতে দুই ভরি স্বর্ণ ও এক হাজার টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু দুই ভরি স্বর্ণের মূল্য ও এক হাজার টাকা এক করলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের বেশি হয়ে যায়। তাই তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। সহজ করে বললে, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব।