• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩০, ১২ শা'বান ১৪৪৬

ভালো বন্ধুর বোঝাপড়া


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২১, ১১:৩৩ এএম
ভালো বন্ধুর বোঝাপড়া

বন্ধু মানে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের মিলনস্থল। একসঙ্গে হাসি-কান্না ভাগ করে নেওয়া, বিপদে পাশে থেকে ভরসা জোগানো, আনন্দের সময় অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া—এমন সব অনুভূতির সংমিশ্রণে তৈরি হয় বন্ধুত্বের সম্পর্ক। মনের বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস, আবেগ আর ছেলেমানুষি হুল্লোড়, যেকোনো কাজের সাক্ষী যে থাকে সেই হচ্ছে বন্ধু। জাতিগত ভেদাভেদে, বড়-ছোট সম্পর্কের ঊর্ধ্বে থাকে এই সম্পর্ক। যাদের চিন্তা এক, বোঝার ক্ষমতায় অদ্ভুত মিল, একে অন্যকে সামলে নেওয়ারও শক্তি থাকে তারাই বন্ধু।

এমন অনেক সংজ্ঞা দিয়েও বন্ধুত্বের গভীরতা বোঝানো সম্ভব নয়। কারণ, এই সম্পর্ক আয়োজন করে হয় না। যা বোঝাপড়ার মাঝেই গড়ে ওঠে তিলে তিলে। তবে জীবনে চলার পথে অনেক বন্ধু হয়। কিন্তু সবার মধ্যেও কেউ থাকেন খুব ভালো বন্ধু। ভালো বন্ধু কেমন হয়, কেমন হয় তাদের বোঝাপড়া, তার কিছু কথা জানাব এই আয়োজনে।

  • বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয় সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত। তারা কখনোই একসঙ্গে থাকলে চুপচাপ থাকবে না। তারা থাকবে প্রাণবন্ত, উচ্ছ্বসিত। যাকে অকপটে সব কথা বলে দেওয়া যায়।
  • বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয় চিরদিনের। বহুদিন পর দেখা হলেও তাদের মধ্যে অনুভূতিটা থাকে প্রথম দিনের মতোই। ছোটবেলার বন্ধু স্কুলজীবন  শেষে আলাদা কলেজে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু যখনই এক হচ্ছে সেই মুহূর্তটি বেশ উপভোগ করছে। বড় হওয়ার পরও সব ব্যস্ততার মাঝে সময় করে দেখা করে নিচ্ছে। কিংবা দেখা না হলেও বহুদিন পরও অনুভূতিটা একই রকম থেকে যায়।
  • বন্ধুত্বের মধ্যে রাগ অভিমান থাকতেই পারে। তবে তা ধরে রাখা যায় না। মানে বন্ধুত্বের রাগ অভিমান যত তাড়াতাড়ি হয়, তত তাড়াতাড়ি ভেঙেও যায়। পরস্পরকে ভুলে গেলে চলবে না। প্রকৃত বন্ধুত্ব কখনো অভিমান করে থাকে না। যেকোনো উপায়ে মনের ভাব আদান-প্রদান করে মনকে হালকা করে নেন।
  • বিশ্বস্ততা যেকোনো সম্পর্কের প্রধান শর্ত। সম্পর্ককে মজবুত করে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক এতটাই গভীয় হয় যে তার ওপর অন্ধভাবে বিশ্বাস করা যায়। কোনোভাবেই বন্ধুত্বের বিশ্বাসভঙ্গ হয় না। ভুল-বোঝাবুঝি হলেও তা কাটিয়ে উঠে সম্পর্ক সুন্দর করে নেয়।
  • বন্ধুত্ব মানে দুঃসময়ে পাশে থাকা। কাউকে না পেলেও দুঃসময়ে বন্ধুকে পাওয়া যায়। বিপদে প্রকৃত বন্ধুকে পাশে পাওয়া যায়। প্রয়োজনে সময়ে-অসময়ে বন্ধুর বিপদে সাহায্য করা। চিন্তাভাবনা ছাড়াই যে বন্ধুর পাশে আপনি সর্বদা থাকতে পারবেন সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
  • বন্ধুত্বে দুইজনের ইচ্ছাকে সম্মান দেখানো হয়। বন্ধুর যেকোনো গোপন কাজের সাক্ষী হচ্ছেন। এর মধ্যে কোনো কাজ থাকতেই পারে, যা আপনার পছন্দ হচ্ছে না। চেপে না রেখে সরাসরি বলুন। একে অন্যের মতামতের গুরুত্ব দিন। শ্রদ্ধাবোধ অবশ্যই জরুরি। সমালোচনা করুন, তবে কটূক্তি করে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না।
  • বন্ধু সব সময়ই শুভাকাঙ্ক্ষী হয়। বন্ধুর ভালোর জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে। বন্ধুর ক্ষতি হবে এমন কিছু করে না বা এমন পরিস্থিতি থেকেও বন্ধুকে সরিয়ে নিয়ে আসে। বন্ধু চায় আপনার উন্নতি হবে। আপনি কাজে সাফল্য পাবেন। পারিবারিকভাবে আপনাকে সাহায্য করবে।
  • বন্ধুত্বের মধ্যে মিথ্যা বা গোপনীয়তা থাকে না। এমন বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেকোনো সত্যি তথ্য দেওয়া, সবকিছুতে খোলামেলা আলোচনা করা ভালো বন্ধুত্বের বৈশিষ্ট্য। বন্ধুর কাছে স্বচ্ছ থাকুন। ভালো বন্ধু পেতে সততা থাকা জরুরি।
  • বন্ধু বন্ধুকে সময় দেয়। ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে দেখা করেন। যোগাযোগ রাখেন। তবে অনেক বন্ধু হয়তো সময় দিতে পারে না। এতে বন্ধুত্ব সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। 
  • নতুন বন্ধুদের ভিড়ে পুরোনো বন্ধু হারিয়ে যায় না। স্কুলজীবনের বন্ধুদের সঙ্গে জীবনের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতিতা থাকে অন্য রকম। তবে নতুন বন্ধুদের মধ্যেও ভালো বন্ধু পাওয়া যায়। যদি বোঝাপড়ার জায়গাটা ঠিক থাকে। তাই সময় করে পুরোনো সম্পর্কগুলোও ঝালাই করে নিতে হয়। বন্ধুকে সময় দিন। ব্যস্ত জীবনে পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করে নিন।
  • বন্ধুরা ভালো শ্রোতা হয়। অনেকেই নিজের কথা কাউকে বলতে না পেরে অস্থিরতায় ভোগে। এ ক্ষেত্রে ভালো বন্ধু হয় শ্রোতা। বন্ধুর সঙ্গে আড্ডায় নিজের না বলা কথা বলে ফেলুন। তবে কেবল নিজের কথাই প্রাধান্য দেবেন না। তার কথাও শুনুন।
  • বন্ধুর সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বন্ধুর কাছে গুরুত্বপূর্ণ এমন বিষয় নিয়ে উপহাস না করাই ভালো।
  • যেকোনো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেয়ে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখুন। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিন। বন্ধুত্বে নানা সমস্যা হতে পারে। এতে দূরত্ব বেড়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি এগিয়ে আসুন। ভুল-বোঝাবুঝি, রাগ, অনুরাগ কাটিয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্কটিকে যত্ন করুন।
Link copied!