• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

‘গানের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কথা বলতে চাই’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২, ১২:০১ পিএম
‘গানের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কথা বলতে চাই’

সংগীত অঙ্গনের এক প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীর নাম শাহীন রহমান ওরফে গুণী ভাইজান। গানের পাতায় নিজের নামকে প্রতিষ্ঠিত করতে যিনি পড়েছেন নানা বিপাকে। পারিবারিক টানাপোড়েনের মধ্যে বেড়ে উঠলেও দেখেছেন জীবন জয়ের স্বপ্ন। সংগীতকে বুকে লালন করে গেয়ে গেছেন একের পর এক দর্শক সমাদৃত গান। সংগীতজীবনের গল্প আর গান নিয়ে আগামীর ভাবনা নিয়ে গুণী ভাইজানের কথা হয় সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তাহনিয়া ইয়াসমিন।

 

সংবাদ প্রকাশ: গান শেখার প্রতি আগ্রহ কবে থেকে, প্রথম কার কাছে গানের হাতেখড়ি?

শাহীন রহমান: আমি একজন গুরুভক্ত লোক। বাংলাদেশের পপ সম্রাট আজম খান আমার গুরু। ওনার গান শুনে, গানের কথা শুনে, গায়কি দেখে প্রথমে আমার গান গাওয়ার প্রতি আগ্রহ জাগে। ১৯৯৪ সালে প্রথম পপগুরু আজম খানের গান দিয়ে প্রোগ্রাম করি। তখন দর্শক-শ্রোতাদের প্রচুর বাহাবা পাই। তারপর গুরু আজম খানের সঙ্গে দেখা করি। যেহেতু তাকে আমি গুরু মানি, তাই বলা যায় তিনিই আমাকে গানের হাতেখড়ি দিয়েছেন। 

সংবাদ প্রকাশ: একজন গায়ক হিসেবে নিজেকে কল্পনা করেছেন কবে থেকে?

শাহীন রহমান: ১৯৯৪ সাল থেকে আমি নিয়মিত গানের সঙ্গে আছি। তখন থেকেই দু-চারটা প্রোগ্রাম করার পর নিজেকে গায়ক মনে হতো। কেননা, আমার গান শুনে সবাই আমাকে উৎসাহ দিত। আমি এখনো সবার উৎসাহ পেয়েই গানের সঙ্গে আছি। 

সংবাদ প্রকাশ: গান করতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন কখনো?

শাহীন রহমান: গান করতে গিয়ে আমার পরিবারের কাছ থেকেই বাধা পাই। আমার বাবা সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। সংসারে তেমন সচ্ছলতা ছিল না। ১৯৯৯ সালে সংগীতার ব্যানারে আমি একটি একক অ্যালবাম বের করি। অ্যালবামের নাম ছিল ‘গ্রহ তারা’। ২০০০ সাল পর্যন্ত আমি গানের চর্চা চালিয়ে যাই। তারপর সংসারের প্রয়োজনে ব্যবসা শুরু করি। সেই সময়টাতে আর প্রোগ্রাম করা হয়নি। 

সংবাদ প্রকাশ: সম্প্রতি প্রকাশিত আপনার গান সম্পর্কে বলবেন।

শাহীন রহমান: আমার চ্যানেলে পাঁচটা গান প্রকাশ করা হয়েছে। দুই মাস আগে ‘রক্তের সাথে মানুষ করে বেইমানি’ নামের একটি গান করেছি। গানটি ইতিমধ্যে প্রচুর সাড়া জাগিয়েছে। হাজার হাজার ছেলেমেয়ে গানটির সঙ্গে টিকটক ভিডিও করছে। আমার চ্যানেলে প্রচুর ভিউ হচ্ছে, সাবস্ক্রাইব বাড়ছে, এতে আমি অনেক আনন্দিত।

সংবাদ প্রকাশ: সিনেমায় প্লেব্যাক—কীভাবে দেখছেন? 

শাহীন রহমান: শিল্পীর জন্য সিনেমায় প্লেব্যাক একটা স্বপ্নের মত। এতে শিল্পীর শিল্পকর্ম পূর্ণতা পায়। 

সংবাদ প্রকাশ: বলা হয় একজন শিল্পীর কাছে তার শিল্পকর্ম একটা দায়—এ বিষয়ে আপনার মতামত।

শাহীন রহমান: একজন শিল্পীর কাছে তার শিল্পকর্মের ভালো-খারাপ দুই দিকই আছে। তবে ভালো দিকটারই চর্চা করা ভালো। শিল্পের মধ্য দিয়ে সুন্দর চিন্তা করা, শ্রোতাদের ভালো কিছু উপহার দেওয়াই একজন শিল্পীর প্রধান কাজ। 

সংবাদ প্রকাশ: বাংলা গান কি তার নিজস্বতা হারাচ্ছে? 

শাহীন রহমান: অবশ্যই, বাংলা গান নিজস্বতা হারাচ্ছে। আমাদের দেশে বাংলা গান নিয়ে প্রতিযোগিতা খুব কম হয়। হওয়া দরকার আরও বেশি। আমাদের এখন অনেক চ্যানেল আছে, তারা যদি বিভিন্ন উৎসবে বাংলা গানের আয়োজন করে, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, জারি সারি প্রোগ্রামের আয়োজন করে, তাহলে বাংলা গান অনেকটা শঙ্কামুক্ত হবে। তা ছাড়া এর মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম তার শিকড় সম্পর্কে জানতে পারবে। 

সংবাদ প্রকাশ: একজন নতুন সংগীতশিল্পীর প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রে ওয়েব মিডিয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

শাহীন রহমান: দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৫ সালে এসে ওয়েব মিডিয়ায় আমি আবার গান শুরু করি। ‘জি সিরিজ’ ব্যানারে ৬টি গানের একটি অ্যালবাম (কষ্টের ফেরিওয়ালা) ও আরও দু-তিনটা গান প্রকাশ করি। তারপর আমার ব্যক্তিগত চ্যানেল তৈরি করি, যার নাম ‘গুণী ভাইজান’। কাজেই আমার কাছে ওয়েব মিডিয়ার গুরুত্ব আসলে বলার অপেক্ষা রাখে না।

সংবাদ প্রকাশ: একজন গায়ক হিসেবে নিজেকে কীভাবে বিচার করবেন?

শাহীন রহমান: গায়ক হিসেবে নিজেকে অনেক সাধারণ একজন মানুষ মনে করি। আমার এখনো অনেক শেখার আছে। জানার আছে।

সংবাদ প্রকাশ: পুরস্কার বা সম্মাননা একজন শিল্পীর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

শাহীন রহমান: পুরস্কার একজন শিল্পীকে উৎসাহ জোগায়। ভালো কিছু করার আগ্রহ বাড়ায়। সামনে এগিয়ে যাওয়ার এবং আরও ভালো কিছু শ্রোতাদের উপহার দেওয়ার আগ্রহ জোগায়। শিল্পীর শিল্পমানের স্বীকৃতি হচ্ছে পুরস্কার বা সম্মাননা। তাই একজন শিল্পীকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পুরস্কার বা সম্মাননা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে আমি করি। 

সংবাদ প্রকাশ: গানকে কেন্দ্র করে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

শাহীন রহমান: গানকে কেন্দ্র করে আমার পরিকল্পনা হচ্ছে, আমার গানের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কথা বলা। সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা। মানুষে-মানুষে ভালোবাসার কথা বলা, দেশকে ভালোবাসার কথা বলা।

 

 

 

কথাপ্রকাশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!