• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বন্ধ হয়ে গেল গাজার দুই বড় হাসপাতাল


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৯:৩২ এএম
বন্ধ হয়ে গেল গাজার দুই বড় হাসপাতাল

ইসরায়েলি হামলা ও জ্বালানি সংকটের কারণে অবরুদ্ধ গাজার সবচেয়ে বড় দুই হাসপাতাল আল-শিফা ও আল-কুদসের সেবা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় আল-জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১২ নভেম্বর) জ্বালানি সংকটের কারণে হাসপাতাল দুটি তাদের সব ধরনের অপারেশন স্থগিত করে দিয়েছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংকট এড়াতে সংস্থাটি দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

আল-শিফা হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, হাসপাতালের রোগী ও কর্মরত ব্যক্তিরা বিদ্যুৎ, পানি ছাড়া রয়েছেন। এমনকি তারা নিরাপদে সেখান থেকে বের হতে পারছেন না। সব মিলিয়ে তারা ভয়াবহ এক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, “এভাবে আর চলতে পারে না। আমাদের স্টাফ ও রোগীদের এখান থেকে নিরাপদে বের করে নিয়ে যাওয়া দরকার।”

উত্তর গাজার কামাল ইদওয়ান হাসপাতালের ডিরেক্টর আল-জাজিরাকে জানান, জ্বালানির অভাবে হাসপাতালটির মূল জেনারেটর কাজ না করায় তারাও হাসপাতালের অপারেশন বন্ধ রেখেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ট্রেডোস আধানাম ঘেব্রিসাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেন, “হাসপাতালগুলো যেখানে মানুষকে বাঁচানোর কথা, সেখানে সেগুলো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব চুপ করে বসে থাকতে পারে না। বর্তমানে আল-শিফা হাসপাতাল তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।”

আল-শিফা হাসপাতালে হামলা ও জ্বালানি সংকটে ৩ জন নার্স সহ ১২ জন রোগী নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ২টি নবজাতক শিশু রয়েছে। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৩টি নবজাতক শিশুর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে ৬০০ থেকে ৬৫০ জন রোগী, ২০০ থেকে ৫০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও দেড় হাজারের বেশি মানুষ আটকা পড়েছেন।

তবে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, হাসপাতালটিতে হামাস বাহিনী লুকিয়ে রয়েছে। সেখান থেকেই তারা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ইসরায়েলি সেনাদের এ দাবি অস্বীকার করেছে।

ইসরায়েলের সেনারা একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানায়, তারা নবজাতক শিশুদের উদ্ধারের জন্য ৩০০ লিটার জ্বালানি হাসপাতালের প্রবেশপথে রেখেছে। কিন্তু হামাস তাদের এ চেষ্টায় বাধা দিয়ে জ্বালানি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া ইসরায়েলি সেনাদের এ দাবিকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েলি সেনার এ ভিডিওর মাধ্যমে বিশ্বকে দেখাতে চায় যে তারা শিশুদের হত্যা করতে চায় না। কিন্তু তারা ৩০০ লিটার জ্বালানির মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে ধোঁয়াশার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে। তাদের এই ৩০০ লিটার জ্বালানি দিয়ে ৩০ মিনিটও ভালোভাবে কাজ করা যাবে না।”

৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলার পর থেকে গাজার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে অর্ধেকের বেশি বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলি হামলায় ১১ হাজার ৭৮ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন।

Link copied!