ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ভারতীয় কংগ্রেসের এ নেতা ওই রায় উচ্চ আদালতে স্থগিত বা বাতিল না হলে আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবে না। এমনকি রাহুল গান্ধী তার আইনসভার পদ হারানোরও ঝুঁকিতে রয়েছেন। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী দুই বছর বা তার বেশি মেয়াদের কারাদণ্ড হলে সংসদ সদস্যের পদ বাতিল হতে পারে। ফলে রাহুলের সে আশঙ্কা রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট ২০১৩ সালে এক মামলার রায়ে জানিয়েছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক অথবা বিধান পরিষদের (বিধানসভার উচ্চকক্ষ) সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সময়ের সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে। রাহুলের ক্ষেত্রে বিচারক ভার্মা তার রায় এক মাস অকার্যকর রাখার কথা জানিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালত সিজেএমের রায় স্থগিত রাখলে তার সদস্য পদ বহাল থাকবে, না হলে রাহুল সদস্য পদ হারাবেন। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কেরালার ওয়েনাড লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন করানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
মোদিকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘চৌকিদার চোর’। তিনি বলেছিলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়’। ওই মন্তব্যের জেরে বিজেপি বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পুরনেশ মোদি কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে দিয়েছিলেন।
ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, নিম্ন আদালত যেহেতু রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছে, সেহেতু লোকসভায় তার সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে কংগ্রেস সমর্থক আইনজীবীদের ভাষ্য, আদালত সাজা ঘোষণার পাশাপাশি আপিলের সুযোগ দিতে দণ্ড স্থগিতও রেখেছে। ফলে সাজা এখনই কার্যকর হচ্ছে না। ফলে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত লোকসভায় রাহুলের পদ বাতিল হওয়ার কোনো কারণ নেই।
লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হওয়া এড়াতে রাহুল গান্ধীকে এখন হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। হাইকোর্ট যদি নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত বা বাতিল করে দেয়, তাহলে আপাতত তার ফাঁড়া কাটবে বলে আইনজীবীদের ভাষ্য।