• ঢাকা
  • শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২, ২১ সফর ১৪৪৬

ট্রাম্প-পুতিনের ৩ ঘণ্টার বৈঠকে নতুন বার্তা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম
ট্রাম্প-পুতিনের ৩ ঘণ্টার বৈঠকে নতুন বার্তা
আলাস্কায় বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার বৈঠক শেষ হয়েছে। বৈঠক শেষে পুতিনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৮ মিনিটে অ্যানকোরেজে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রায় ৩ ঘণ্টা বৈঠক হয় তাদের মধ্যে।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রায় ৩ ঘণ্টার বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাদের বৈঠক ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হয়েছে। তবে এখনো কিছু বিষয়ের মীমাংসা বাকি রয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে অগ্রগতি অর্জনের জন্য আমাদের খুব ভালো সুযোগ রয়েছে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি এখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে কথা বলবেন। চুক্তি ‘শেষ পর্যন্ত’ তাদের ওপর নির্ভর করবে এবং তাদের সম্মত হতে হবে।

চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি নেই উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু আমরা শেষ পর্যায়ে পৌঁছাইনি।’

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়েও তিনিও ‘আন্তরিকভাবে আগ্রহী’। এই যুদ্ধকে ‘ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য এই যুদ্ধের ‘মূল কারণগুলো’ নিরসন করতে হবে।

বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রে ইউক্রেন সংঘাত ছিল জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একটি স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য আমাদের এই সংঘাতের মূল কারণগুলো নির্মূল করতে হবে।’ তবে মূল কারণগুলো বলতে কী বুঝিয়েছেন, তার বিস্তারিত তিনি উল্লেখ করেননি।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয়রা শান্তিপ্রক্রিয়ায় বাধা না দেওয়ার পথ বেছে নেবেন বলে আশা করছেন তিনি।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘শুভকামনার জন্য আমি ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, উভয় পক্ষকেই ফলাফলের দিকে নজর দিতে হবে।

পুতিন আরও বলেন, ‘ট্রাম্প স্পষ্টত তার দেশের সমৃদ্ধির বিষয়ে মনোযোগী। তবে তিনি এটাও বুঝেছেন, রাশিয়ারও নিজের স্বার্থ রয়েছে।’

এ বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। আর পুতিনের সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং পুতিনের সহকারী ও মুখপাত্র ইউরি উশাকভ।

তবে কোনো ধরনের সমঝোতা না হলেও এই বৈঠকে পুতিনের বড় জয় হয়েছে বলে সিএনএনের লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সিএনএন বলছে, ট্রাম্পকে বিচলিত এবং ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পুতিন অটল ছিলেন এবং তিনি যুদ্ধের মূল কারণগুলোর কথা বলছিলেন। 

সিএনএন বলছে, গতকালও হুমকির সুরেই কথা বলেছেন পুতিন। তিনি কিয়েভ ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সতর্ক করে দিয়েছেন যে তিনি ট্রাম্পকে যে চলমান প্রক্রিয়ায় টেনে এনেছেন এবং এতে যেন তারা হস্তক্ষেপ না করে। 

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমরা আশা করছি কিয়েভ ও ইউরোপীয় রাজধানীগুলো এই সমস্তকিছু গঠনমূলকভাবে গ্রহণ করবে। এতে কোনো বাধা তৈরি করবে না, উস্কানি ও পর্দার আড়ালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে উদীয়মান অগ্রগতি ব্যাহত করার চেষ্টা করবে না। 

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন এই বৈঠকে দুইটি বড় জয় পেয়েছেন। প্রথমটি হলো, যুক্তরাষ্ট্র তাকে লাল গালিচায় স্বাগত জানিয়েছে এবং তার যাত্রা ছিল ভারী সাজোয়া যানে। 

পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাই পুতিনকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ- একজন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীর জন্য সুনাম পুনরুদ্ধারের এক অসাধারণ উপস্থাপন।

পুতিনের দ্বিতীয় জয় হলো সময়। তিনি তার বাহিনীর জন্য ফ্রন্টলাইন পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আরও সময় পেলেন। এটা এখনো স্পষ্ট নয় যে ট্রাম্প যথেষ্ট ক্ষুব্ধ কিনা এবং সামনের দিনগুলোতে রাশিয়ার জন্য দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞা দেবেন। কিন্তু পুতিনকে তাড়াহুড়া মনে হয়নি এবং তিনি পরবর্তী বৈঠকের পরামর্শ দিয়েছেন। 

অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, শুক্রবার আলাস্কায় তাদের বৈঠক ‘খুবই ফলপ্রসূ’ হয়েছে, তবে চূড়ান্ত লক্ষ্যে ‘পৌঁছানো যায়নি’।

রয়টার্স বলেছে, বৈঠক শেষে যুদ্ধবিরতির কোনো ঘোষণা আসেনি। এই আলোচনা আদৌ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!