• ঢাকা
  • বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ০৬ মুহররম ১৪৪৬

এশিয়ায় ফ্রান্সের সম্পৃক্ততা বাড়াতে চান ম্যাক্রোঁ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম
এশিয়ায় ফ্রান্সের সম্পৃক্ততা বাড়াতে চান ম্যাক্রোঁ
ছবি: সংগৃহীত

এশিয়া অঞ্চলে ফ্রান্স তার অবস্থান আরও দৃঢ় করতে চায়। এজন্য এই অঞ্চলে ঝটিকা অভিযানে নেমেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তার উদ্দেশ্য এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর কাছে ফ্রান্সকে অন্যান্য বৃহৎ শক্তিগুলোর কার্যকর বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করা।

এর আগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দুইদিন ব্যাপী জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন ম্যাক্রোঁ। সেখানে তার সম্মানে একটি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার, এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দ্রুত-বর্ধনশীল অর্থনীতির বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

ঢাকাতেও দুই দিনের সফরে এসেছেন ম্যাক্রোঁ। দক্ষিণ এশিয়ায় যেখানে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় শক্তিগুলো প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, সেখানে মাঝারি আকার ও সক্ষমতার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার কৌশল নিয়েছে ফ্রান্স। ঢাকা সফরও ফরাসি সেই কৌশলের অংশ।

রোববার রাতে ঢাকায় এসে ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, “এই অঞ্চল এখন নতুন সাম্রাজ্যবাদের মুখে, তাই আমরা বিকল্প একটি পথ প্রস্তাব করতে চাই। বন্ধু দেশগুলোর স্বাধীনতা ও কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করাকে আমাদের সব কৌশলে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সার্বভৌম নীতি গ্রহণের স্বাধীনতা পায়।”

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ফরাসী রাষ্ট্রনায়ককে পরিবর্তনের দূত বলে অভিহিত করেন শেখ হাসিনা।

ম্যাক্রোঁ ঢাকায় এসেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সফরের পরপরই। এর আগে জি-২০ সম্মেলনের আগেই ঢাকা সফর করেন ল্যাভরভ।

রাশিয়া বাংলাদেশের রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে, প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে রুশ সরকারের ঋণ সহায়তায়।

এদিকে ফ্রান্সও বিশ্ববাজারে তাদের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা বিক্রি করতে চায়। আপাতত বাংলাদেশে ফরাসি অর্থায়নে কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা অনেক দূরবর্তী বিষয় হলেও – ফ্রান্স হয়তো সে পথও খোলা রাখতে চাইছে।

তবে বাংলাদেশের এরোস্পেস বা বিমান খাতে কিছুটা অগ্রগতি করেছে ফ্রান্স। বাংলাদেশের বিমান পরিবহনে দীর্ঘদিন ধরেই আছে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং এর আধিপত্য।

বাংলাদেশে ইউরোপ তথা ফ্রান্সের বিমান শিল্পের বিক্রি বাড়ানোর উদ্দেশ্য আছে ম্যাক্রোঁর। সোমবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহন সংস্থা– বাংলাদেশ বিমানের কাছে এয়ারবাসের ১০টি এ-৩৫০ উড়োজাহাজ বিক্রির চুক্তিও করতে পেরেছেন তিনি।

চলতি বছর মঙ্গোলিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি, শ্রীলঙ্কার মতো এশীয় দেশে সংক্ষিপ্ত তবে শীর্ষ পর্যায়ের সফর করেছেন ম্যাক্রোঁ। ধারাবাহিক এসব সফরের পরবর্তী পদক্ষেপে ছিল বাংলাদেশ।

ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ২০১৮ সালে ফ্রান্স তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ঘোষণা করে। এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের দ্বৈরথের মধ্যেই ম্যাক্রোঁ এ অঞ্চলে ‘তৃতীয় বিকল্প’ হিসেবে ইউরোপকে সম্পৃক্ত করার কথা বলে আসছেন তখন থেকে।

ফরাসি একজন কূটনীতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা ছয় কোটি জনসংখ্যার দেশ, তাই আমরা সরাসরি চীনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারব না। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মিত্র হলেও, আমাদের নিজস্ব স্বার্থ আছে। কোনো একটি দেশের ওপর যেন অতি-নির্ভরশীল না হতে হয়, সেজন্য আমরা এই অঞ্চলের দেশগুলোকে তাদের জোট বহুমুখীকরণে সহায়তা করতে পারি।’

Link copied!