গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিক আল-দাহদুহের পরিবারের চার সদস্য নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে আল-জাজিরা কতৃপক্ষ বলেছে, আমাদের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না, আমরা সত্য বলবোই।
আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দাহদুহের পরিবার গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল। তারা ইসরায়লের নির্দেশনা মেনে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে এসেছিল। বুধবার ইসরাইয়েলি বাহিনী সেখানেও বোমা হামলা চালায়। হামলায় দাহদুহের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও নাতি নিহত হয়।
সাংবাদিক আল-দাহদুহ তার স্ত্রী আর ছেলে-মেয়ের লাশ সামনে রেখেই সরাসরি আল জাজিরার সম্প্রচারে যোগ দেন।
আল-জাজিরার আরবি উপস্থাপক তামের আলমিশাল বলেছেন, “আল-দাহদুহ হলেন ‘গাজার কণ্ঠস্বর’। ইসরাইল ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের টার্গেট করছে। এর ধারাবাহিকতায় তারা আল-জাজিরা আরবির গাজার ব্যুরো প্রধান দাহদুহের পরিবারকে হত্যা করেছে।”
তিনি বলেন, ‘আল-দাহদুহ সাংবাদিকতার জগত এবং গাজার স্তম্ভ। তিনি বছরের পর বছর ধরে গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণ, যুদ্ধ, সাংবাদিকদের টার্গেট, নারী ও শিশুদের হত্যার সংবাদ প্রচার করেছেন নিরলসভাবে।’
তামের আলমিশাল বলেন, ‘দাহদুহ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ইসরায়েল নৃশংস হামলা চালানোর পরও তিনি কাজ বন্ধ রাখেননি। তিনি প্রতিবেদন করে যাচ্ছেন এবং সেখানে যা ঘটছে তা বিশ্বকে জানানোর জন্য গাজা ত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন।’
‘দাহদুহের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। আমাদের কণ্ঠরোধ করা যাবে না এবং আমরা বলতেই থাকব। প্রতিদিন যেখানেই নৃশংসতা চলবে, সত্য উদ্ঘাটনে সেখানেই আমরা ছুটে যাবো- এই অঙ্গীকার করছি।’
ইসরায়েলের বিমান হামলায় দাহদুহের স্ত্রী, কিশোর ছেলে মাহমুদ ও সাত বছরের মেয়ে শাম নিহত হয়। ঘণ্টাখানেক পর জানা যায়, হামলায় তার নাতি আদমও নিহত হয়েছে। পরিবারের বাকি সদস্যরা এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
আল-জাজিরার গাজা প্রতিবেদক ইয়ামনা আল-সাঈদ বলেন, ‘দেখুন কী বেদনাদায়ক একটা ব্যাপার, আমরা রিপোর্টাররা সারাবিশ্বকে জানাই যে, আমাদের চারপাশে কী হচ্ছে! আমাদেরই আবার পরিবার ও সহকর্মীদের মৃত্যুর খবর জানাতে হয়!’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ২২ সাংবাদিক নিহত হয়।
সূত্র-আল জাজিরা।
