আবারও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রান-অফ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি।
রোববার (২৮ মে) তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। ঘোষিত বেসরকারি ফল অনুসারে, ৯৮ শতাংশ ভোট গণনার পর তিনি পেয়েছেন ৫২ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।
এর মধ্যে এরদোয়ান পেয়েছেন ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৭ হাজার ৮৪ ভোট এবং কিলিদারোগলু পেয়েছেন ২ কোটি ৪৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩৯ ভোট। নির্বাচিত হওয়ার ফলে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন এরদোয়ান।
বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে তুরস্কের উচ্চ নির্বাচন বোর্ডের প্রধান আহমেদ ইয়ানার এক সম্মেলনে নির্বাচনের ফল প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, “রোববারের ভোটে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলুর চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।”
তুরস্কের আধুনিক ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল এটি। কেননা, এ নির্বাচনেই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। কারণ, তার বিরুদ্ধে বিগত দিনে নির্বাচন করা সব বিরোধী দল এককাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছিল। আর তাই তো ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের মসনদ হালকা ধাক্কা খেলেও সেটি যথেষ্ট ছিল না।
এর আগে তুর্কিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। ভোট দিয়েছেন দেশটির প্রায় কোটি মানুষ। প্রথমবার ভোট দিয়েছেন ৪ কোটি ৯০ লাখ মানুষ। ভোটারদের জন্য দেশজুড়ে ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বাক্স প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
১৪ মে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম দফা নির্বাচন
প্রথম পর্বের ভোটে এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে পারেননি তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তুরস্কের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্টকে ৫০ শতাংশ সমর্থন পেতে হয়। সেই নির্বাচনে এরদোয়ান পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট। অল্পের জন্য ঝুলে যায় তার ভাগ্য। অন্যদিকে এই নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিপক্ষ কিলিচদারোগলু পেয়েছিলেন ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট। ফলে দেশটির নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হয়।
এদিকে নির্বাচনী ফলে এরদোয়ানের জয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এরদোয়ান এবং তুরস্কের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুসিক এবং ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ফোন করে এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাকে বাকু সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এ ছাড়া ক্ষমতাসীন পার্টির কর্মী-সমর্থকরা তুরস্কজুড়ে আনন্দ মিছিল শুরু করেছেন। সমর্থকরা তার ইস্তাম্বুলের বাসভবনে জড়ো হয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :