জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের ইনকিউবেটরে থাকা ৬ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে আল-জাজিরা এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে জানা যায়, হাসপাতালটি ইসরায়েলি সেনারা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এজন্য হাসপাতালটিতে জ্বালানির অভাবে শিশুদের ইনকিউবেটর বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় চিকিৎসকরা।
জ্বালানির অভাবে গাজার দুটি বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফা এবং আল-কুদসের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলি সেনারা আল-শিফা হাসপাতালের কাছাকাছি থাকা সবাইকে লক্ষ্য করে হামলা করছে। যে কারণে হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালের ভিতরে আটকে পড়েছে।
হাসপাতালটিতে মোট ছয় শিশুসহ নয় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতালটিকে ঘিরে ফেলার কারণে হাসপাতালটির ভেতরে কয়েকশ রোগীও আটকা পড়ে। এখানে কয়েক হাজার উদ্বাস্তু আশ্রয়ে ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের চারপাশে মারাত্মক হামালা চালিয়েছে। গোলাগুলি এবং বোমা হামলার শব্দগুলো হাসপাতাল চত্তরজুড়ে শোনা যাচ্ছিল।
আল-শিফার সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাঃ মারওয়ান আবু সাদা বিবিসিকে বলেন, “সরঞ্জাম ও বিদ্যুৎ এর অভাবে অপরিণত নবজাতকদের মৃত্যু হয়েছে। যেসব শিশু আগে ইনকিউবেটরে ছিল তাদের বিদ্যুতের অভাবের কারণে একসঙ্গে সার্জিকেল ওয়ার্ডের একটি বিছানায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যান্য কয়েক ডজন নবজাতক বর্তমানে তাদের প্রয়োজনীয় যত্ন পাচ্ছে না।” এদিকে শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিকিৎসকরা আতঙ্কে আছেন। তারা বলছেন, “আমরা সব শিশুদের জীবন হারাতে যাচ্ছি।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা বলছে, প্রায় ৩ হাজার রোগী এবং কর্মী পর্যাপ্ত জ্বালানি, পানি বা খাবার ছাড়াই হাসপাতালের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রিসাস গাজার হাসপাতালগুলোর ‘ভয়াবহ এবং বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। হাসপাতাল এলাকায় ধারাবাহিক হামলার কারণে ইতিমধ্যেই জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নবজাতক শিশুসহ আরও অনেক রোগী দুঃখজনকভাবে মারা যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় কমপক্ষে ১১ হাজার ১৮০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৪ হাজার ৬০৯ শিশু রয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের নেওয়া পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যুদ্ধাপরাধ। সূত্র: আল-জাজিরা।