• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ৫৩


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৩, ০৪:৪৪ পিএম
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ৫৩

মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) একটি অনুষ্ঠানে বিমান হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনী এবং এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৩ জন মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে অনেক বেসামরিক লোকজনও রয়েছেন।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিবিসি ও আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। আজ সকালে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। হামলায় হতাহতের সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি। সাগাইং এলাকা ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাজিগি শহরের ব্যারেজে হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

অন্যদিকে আল-জাজিরা প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলছে, মঙ্গলবারের হামলায় কয়েক ডজন লোক নিহত হয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে এটি অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক টনি চেং জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনিক কার্যালয় উদ্বোধনের জন্য জড়ো হওয়ার সময় বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। চেং বলেন, “স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে জড়ো হয়েছিল বাসিন্দারা। সকালে জঙ্গিবিমান দিয়ে আক্রমণ চালায়। হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছেন।” মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পিডিএফ নেতা রয়টার্সকে জানিয়েছে, সকালে সাগাইংয়ে তাদের স্থানীয় অফিসের আঙিনায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অতর্কিতে সামরিক বাহিনীর কয়েকটি যুদ্ধবিমান সেখানে উপস্থিত হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়া শুরু করে এবং তাতে বেশ কয়েকজন হতাহত হন। এই হতাহতদের মধ্যে বেসামরিক লোকজন আছেন।

মিয়ানমারভিত্তিক ইরাবতী নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় অন্তত ৫৩ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে পিডিএফের ওই নেতা নিহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেননি।

এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে ক্ষমতাসীন জান্তা মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কোনো মুখপাত্র তাতে সাড়া দেননি।

এর আগে মিয়ানমারে গত এক সপ্তাহে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে হামলা করে অন্তত ১১৪ জন সরকারি সেনাকে হত্যা করেছে। পিডিএফ ও সশস্ত্র গোষ্ঠী যৌথভাবে সরকারের বর্ডার গার্ড ফোর্সেসের (বিজিএফ) ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে। কারেন রাজ্যের মিওয়াদি টাউনশিপে এই হামলা চালানো হয়।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে। এ ছাড়া নোবেলজয়ী সু চিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কার্যক্রম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে এখন পর্যন্ত দুই হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

আহত হয়েছেন আরও অনেকে। অভিযান চালিয়ে অনেককে আটক করারও অভিযোগ ওঠে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন দেশটির সেনাদের নির্যাতনে। শুধু তা-ই নয়, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের অর্থনীতি। এখনো প্রায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর সদস্যদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যায়।

এ নিষেধাজ্ঞার খবর আসার আগেও যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের কর্মকর্তা, কোম্পানি ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ৮০ জন ব্যক্তি ও ৩০টির বেশি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

Link copied!