প্রকৃতির নিয়মেই মানুষ জন্ম নেয়, মৃত্যুরবরণ করেন। মাঝখানের এই ছোট জীবনে তাই জেনে-শুনে আত্মহত্যার মতো কোনোরকম মারাত্মক ভুল করা উচিত নয়। আত্মহত্যার মতো কোনো কারণ যদি সামনে এসেও যায় সেটিকে কৌশলে দূরে ঠেলে দিন। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করেন। প্রতিদিন বাংলাদেশে আত্মহত্যা করেন প্রায় ৩০ জন।
পরিসংখ্যান বলছে, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। প্রধান কারণ হিসেবে হতাশার কথা বলা হচ্ছে। তবে মুহূর্তের ভুলে আত্মহত্যা এই বয়সীদের মধ্যেই দেখা যায়। সামাজিক ও অবস্থানগত কারণের ওপর নির্ভর করে আত্মহত্যার প্রবণতা। একাকিত্ব, আর্থিক সমস্যা ও সমাজের নানাবিধ চাপে অবসাদে ভোগেন এ রকম মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
পড়াশোনা করা সত্ত্বেও যোগ্য ব্যক্তি তাঁর উপযুক্ত চাকরি পাচ্ছেন না, ব্যক্তিগত জীবনে অশান্তির জের, কর্মক্ষেত্রে হেনস্তা ইত্যাদি নানা কারণ থেকে মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ইদানীং বয়স্কদের মধ্যেও একাকিত্ব থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এমনও বহু মানুষ আছেন যাদের পরিবারে আত্মহত্যার প্রবণতা এক ধরনের অসুখ। সেখান থেকেও কারণে অকারণে লোকজন আত্মহননের দিকে এগোয়।
আপনার মনের মধ্যে যদি আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে তাহলে যে বিষয়গুলো মনে রাখবেন চলুন সেগুলো জেনে নিই-
- যদি আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসে তাহলে সবার আগে ভাববেন জীবনে অনেক কিছু করার বাকি রয়ে গেছে। অনেক কিছু জানার আছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কের বাইরেও একটি জগত থাকে। সে জগতে ডুব দিন।
- আপনার পাশের জনের সঙ্গে কথা বলুন। অনেক বেশি করে মিশতে হবে সবার সঙ্গে। ভার্চুয়াল বন্ধুদের সঙ্গে আপনি চ্যাট করতে পারবেন। হয়তো মেন্টাল সাপোর্ট পাবেন। তবে আপনার পাশের জন যেভাবে আপনার সঙ্গে থাকবে সেভাবে নয়।
- পছন্দের কাজ করুন। তার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিন। এক প্রকার জোর করেই তা করতে হবে। নিজেকে বলতে হবে, আমি ভালো থাকব।
- আপনার চারপাশে এ রকম অনেক মানুষ পাবেন যারা সত্যিই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। অনেক বেশি খারাপ রয়েছেন। সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিন।
- পছন্দের মানুষদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার করুন। যোগাযোগ রাখুন। পারিবারিক অনুষ্ঠানে থাকার চেষ্টা করুন। নিজের মতো করে মানিয়ে নেওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- সাফল্য-ব্যর্থতা, ভালো থাকা-মন্দ থাকা এগুলো জীবনের অংশ। ঘুরে ফিরে সবই আসে। সময়ের ওপর ভরসা রাখুন। আজ না হলে কাল সাফল্য আসবেই। ভালো কিছু হতে হয়তো সময় লাগে। সে সফলতা হাতে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
ওপরের কোনোটাই যদি কাজে আসে তাহলে অবশ্যই মনোবিদের কাছে যান। তাকে আপনার সমস্যার কথা খুলে বললে তিনি নিশ্চয়ই আপনাকে পথ দেখাতে পারবেন।