করোনাভাইরাসের মধ্যেই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস। ভারতের কেরালায় ইতোমধ্যে ১৪ জনের শরীরে এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। খবর এনডিটিভি।
জিকা ভাইরাসের প্রথম ধরা পড়ে ভারতের ২৪ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে। তবে আক্রান্ত ওই নারীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
জিকা ভাইরাস সম্পর্কে এখনও অনেকেরই তেমন ধারণা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো জিকা মশাবাহিত একটি ভাইরাস। এডিস মশার মাধ্যমেই এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। এডিস মশার কারণেই ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, পীতজ্বরসহ বিভিন্ন রোগ ছড়ায়। জিকা ভাইরাসও এডিস মশার মাধ্যমেই মানুষে শরীরে সংক্রমিত হয়।
১৯৪৭ সালে প্রথম আফ্রিকার উগান্ডায় এই ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে বাঁদরের দেহে। পরে ১৯৫২ সালে তানজানিয়া ও উগান্ডায় মানবদেহে মেলে এই ভাইরাস। জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গিয়েছে আফ্রিকা, এশিয়ায়। আফ্রিকা ও এশিয়ায় ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত বদেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণের তেমন কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ভারতে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বাংলাদেশেও সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশাই জিকা ভাইরাসের বাহক। যেহেতু দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে, সেহেতু জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
কীভাবে বুঝবেন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন? জিকা ভাইরাসে উপসর্গে হালকা ধরনের জ্বর, শরীরে ব়্যাশ, মাথা ব্যথা, লাল চোখ হয়ে যাওয়া, পেশিতে ব্যথা হওয়া এবং জয়েন্টে ব্যথা হওয়ার মতো সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়।
মেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর মতে, জিকা ভাইরাস গর্ভবতী নারী থেকে গর্ভের সন্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করতে পারে জিকা ভাইরাস।
জিকা ভাইরাসের চিকিতসা সম্পর্কে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানায়, জিকার সংক্রমণে মৃত্যুর আশঙ্কা তুলনায় কম। এটি চিকিৎসায় কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ নেই। তবে সংক্রমণ হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং হাইড্রেট থাকলে উপকার পাওয়া যাবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। জ্বর এবং ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যেহেতু জিকা ভাইরাসের কোনও ওষুধ নেই, সেহেতু এই ভাইরাস প্রতিরোধেই একমাত্র সমাধান হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানান_
- এডিস মশার বংশ বিস্তার হতে দেওয়া যাবে না।
- মশার কামড় থেকে রেহাই পেতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
- বাড়ি, অফিস ও কারখানার আশপাশে পরিস্কার রাখতে হবে।
- টবে, বালতিতে পানি জমে থাকতে দেওয়া যাবে না।
- সংক্রামিত ব্যক্তিকে আলাদা রাখুন।
- সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াবেন না।