১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ত্যাগ এবং বিজয়ের গল্প সেলুলয়েডের ফিতায় বন্দি করেছেন অনেক নির্মাতা। স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে নির্মিত এমন ৮টি কালজয়ী ও আলোচিত সিনেমা নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের আয়োজন।
ওরা ১১ জন
স্বাধীনতার পরপরই নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সিনেমা ‘ওরা ১১ জন’। চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত এই সিনেমাটি ১৯৭২ সালের ১১ আগস্ট মুক্তি পায়। পারভেজ ফিল্মসের ব্যানারে এটি প্রযোজনা করেন চিত্রনায়ক সোহেল রানা। মুক্তির পর বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলা এই সিনেমায় অভিনয় করেন রাজ্জাক, শাবানা, নূতন, খসরু, সৈয়দ হাসান ইমাম, খলিলউল্লাহ খান, সুমিতা দেবী, রওশন জামিল, এটিএম শামসুজ্জামান প্রমুখ।
আলোর মিছিল
১৯৭৪ সালের ২৫ জানুয়ারি মুক্তি পায় নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত সিনেমা ‘আলোর মিছিল’। মুক্তিযুদ্ধের আবেগ ও দেশপ্রেমের গল্পে নির্মিত এই সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ফারুক আহমেদ, ববিতা, রাজ রাজ্জাক, সুজাতা, আনোয়ারা হোসেন, রোজী আফসারী প্রমুখ।
মেঘের অনেক রং
হারুনর রশীদ পরিচালিত ‘মেঘের অনেক রং’ মুক্তি পায় ১৯৭৬ সালের ১২ নভেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত নারীদের ট্র্যাজেডি নিয়ে গড়ে উঠেছে এর কাহিনি। সিনেমায় লাঞ্ছিত এক নারী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, আর তার সন্তান মাকে খুঁজে ফেরে। অবশেষে সে এক ডাক্তার দম্পতির কাছে আশ্রয় পায়। এতে অভিনয় করেন মাথিন, ওমর এলাহী, রওশন আরা, আদনান প্রমুখ।
আগুনের পরশমণি
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমাটি ৮টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসাদুজ্জামান নূর, বিপাশা হায়াত, আবুল হায়াত, ডলি জহুর, শিলা আহমেদ, দিলারা জামান, সালেহ আহমেদ প্রমুখ।
হাঙর নদী গ্রেনেড
প্রখ্যাত সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৯৭ সালে ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ নির্মাণ করেন চাষী নজরুল ইসলাম। একজন সন্তানহারা মায়ের ত্যাগের গল্প নিয়ে এই সিনেমা। মায়ের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন চিত্রনায়িকা সুচরিতা। এছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে ছিলেন সোহেল রানা, অরুণা বিশ্বাস, অন্তরা, ইমরান প্রমুখ।
শ্যামল ছায়া
হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি অনবদ্য সৃষ্টি ‘শ্যামল ছায়া’। ২০০৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমায় একজন মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করেন প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি। আরও অভিনয় করেন রিয়াজ, মেহের আফরোজ শাওন, স্বাধীন খসরু, শিমুল, চ্যালেঞ্জার, ফারুক আহমেদ, ডা. এজাজ, তানিয়া আহমেদ প্রমুখ।
গেরিলা
নাসির উদ্দীন ইউসুফ পরিচালিত ‘গেরিলা’ মুক্তি পায় ২০১১ সালে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত এই সিনেমাটি ১০টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন জয়া আহসান ও ফেরদৌস। অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান, রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী ওয়াদুদ, শম্পা রেজা, গাজী রাকায়েত প্রমুখ।
আমার বন্ধু রাশেদ
মুহম্মদ জাফর ইকবালের জনপ্রিয় শিশুতোষ উপন্যাস অবলম্বনে মোরশেদুল ইসলাম নির্মাণ করেন ‘আমার বন্ধু রাশেদ’। ২০১১ সালের ১ এপ্রিল মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি সব মহলে দারুণ প্রশংসিত হয়। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন চৌধুরী জাওয়াতা আফনান, রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইনামুল হক, হুমায়রা হিমু, আরমান পারভেজ মুরাদ, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, গাজী রাকায়েত প্রমুখ।

































