বলিউডে কিছু নাম থাকে, যাঁদের উপস্থিতি শুধু পর্দাতেই নয়, ব্যক্তিত্বেও আলাদা করে চোখে পড়ে। সুস্মিতা সেন তেমনই এক নাম। ১৯৯৪ সালে ‘মিস ইউনিভার্স’ খেতাব জিতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘ অভিনয়জীবনে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন শক্তিশালী, স্বাধীনচেতা ও স্পষ্টভাষী অভিনেত্রী হিসেবে। তবে তাঁর অভিনয়জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত এসেছে, যা তাঁর জন্য সহজ ছিল না। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ছিংগারি’ ছবিকে ঘিরে তেমনই একটি ঘটনা সে সময়ের বিনোদন সংবাদমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়।
কল্পনা লাজমি পরিচালিত এই ছবিতে সুস্মিতা সেন অভিনয় করেছিলেন এক যৌনকর্মীর চরিত্রে, যাঁর জীবনে প্রেম ও সামাজিক বাস্তবতা অত্যন্ত জটিলভাবে জড়িয়ে যায়। ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী।
শুটিং চলাকালীন একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে সে সময় কিছু গণমাধ্যমে দাবি ওঠে, সুস্মিতা ওই দৃশ্যটি করতে গিয়ে মানসিকভাবে অস্বস্তিবোধ করেছিলেন। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল, দৃশ্যটির সময় পরিস্থিতি তাঁর জন্য অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল এবং সেটে একধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। যদিও বিষয়টি নিয়ে সুস্মিতা সেন নিজে কখনো প্রকাশ্যে বিস্তারিত বা সরাসরি কোনো অভিযোগ আনেননি, তবু ঘটনাটিকে ঘিরে নানা আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।
এই ছবিকে কেন্দ্র করে আরেকটি বিতর্ক তৈরি হয় নতুন অভিনেতা অনুজ সাহনির একটি বক্তব্য ঘিরে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছিলেন, সিনেমাটির একটি চুম্বন দৃশ্য নাকি ৩৬ বার শুট করতে হয়েছিল। তাঁর এই মন্তব্য মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এবং তা নিয়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক।
শোনা যায়, এই বক্তব্যে সুস্মিতা সেন বেশ বিরক্ত হন। তিনি ছবিটির প্রচারণায় অংশ নিতেও অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন বলে তখনকার সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়। এমনকি নির্মাতারা জানিয়েছিলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের কারণে ছবিটির প্রচারণা পরিকল্পনা প্রায় দুই মাস পিছিয়ে যায়। পরে অনুজ সাহনি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বিষয়টি নিয়ে আর মন্তব্য না করার সিদ্ধান্ত নেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বলিউড ও ভারতীয় চলচ্চিত্রজগতে পরিবর্তন এসেছে। এখন সেটে ‘ইনটিমেসি কো-অর্ডিনেটর’ থাকার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের স্বস্তি, সম্মতি ও মানসিক নিরাপত্তাকে আগের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে দুই দশক আগের বাস্তবতা ছিল ভিন্ন, আর সেই সময়ে কাজ করা অনেক অভিনেত্রীর জন্য অভিজ্ঞতা খুব স্বস্তিদায়ক ছিল না—এমন কথাই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে আলাদা আলাদা সময়ে।

































