কলকাতায় ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসির সফর ঘিরে উন্মাদনার মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলি। মেসির সঙ্গে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া ট্রল ও কটাক্ষে এবার প্রকাশ্যে নিজের অবস্থান জানালেন তিনি।
‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর অংশ হিসেবে গত শনিবার কলকাতায় আসেন মেসি। সেই সময় একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শুভশ্রী। নির্দিষ্ট হোটেলে গিয়ে মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও ছবি তোলেন তিনি, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
শুভশ্রী জানান, আমন্ত্রণ অনুযায়ী তিনি সকাল সাড়ে আটটার দিকে হোটেলে পৌঁছান এবং প্রায় ১০টা থেকে ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ছবি তোলার পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় মেসির জনসংযোগ দলের পক্ষ থেকে তাঁকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। আয়োজকদের সুবিধার কথা ভেবেই তিনি সেখানে যান বলে জানান অভিনেত্রী।
তবে মাঠে উপস্থিত থাকলেও তিনি যে গ্যালারি বা মাঠের খুব কাছাকাছি ছিলেন না, সে কথাও স্পষ্ট করেন শুভশ্রী। তাঁর দাবি, মাঠের পাশের তাঁবুতে বসেও তিনি নিজে মেসিকে ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছিলেন না। এরপরও সামাজিক মাধ্যমে এমনভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে যেন তিনি দর্শকদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন—এতে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি থেকে কেন শুধু তাঁকেই আমন্ত্রণ জানানো হলো—এই প্রশ্নে শুভশ্রী বলেন, এর উত্তর আয়োজক বা মেসির পিআর টিমই ভালোভাবে দিতে পারবে। নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অভিযোগও তিনি নাকচ করে দেন।
ঘটনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে শুভশ্রী জানান, মাঠে থাকা অবস্থায় প্রযুক্তিগত জ্যামারের কারণে ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করা সম্ভব হয়নি। পরে শুটিংয়ে পৌঁছানোর পর অজান্তেই ছবিগুলো পোস্ট হয়ে যায়। বিষয়টি তিনি পরে বুঝতে পারেন।
এই পুরো ঘটনায় সবচেয়ে বেশি যেটি তাঁকে আঘাত করেছে, তা হলো ব্যক্তিগত আক্রমণ। শুভশ্রী বলেন, তাঁকে ‘কারও প্রাক্তন প্রেমিকা’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত আপত্তিকর ও নারীবিদ্বেষী। তাঁর প্রশ্ন, একজন নারী ও অভিনেত্রী বলেই কি তাঁকে এভাবে টার্গেট করা হচ্ছে? বলিউডে অন্য অভিনেত্রীরা মেসির সঙ্গে ছবি তুললেও তাঁদের নিয়ে এমন বিতর্ক হয়নি—সেটিও তুলে ধরেন তিনি।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে শুভশ্রী জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কটাক্ষের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে তাঁর ছোট সন্তানদের লক্ষ্য করেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। একজন মা হিসেবে তিনি এটিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানান।
শেষে শুভশ্রী বলেন, তিনি মানুষের আবেগ বোঝার চেষ্টা করেছেন, শুরুতে সমালোচনাও সহ্য করেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ ও শিশুদের নিয়ে হুমকি দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ২০২৬ আসছে—এখনও যদি নারীদের এভাবে হেয় করা হয়, তাহলে আমাদের কোথায় দাঁড়িয়ে থাকা উচিত?


































