ঢাকার অদূরে অবস্থিত সাংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারলেও ৫১ বছর পর এখনো নানা সংকট বিদ্যমান। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সব সংকট অচিরেই দূর হবে বলে আশা উপাচার্যের। বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর পূর্ণ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে ছয়টি হলের কাজ শেষ পর্যায়ে। এছাড়া এ প্রকল্পের অধীনে লেকচার থিয়েটার, পরীক্ষার হল, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, নতুন লাইব্রেরি ভবন ও ছাত্রীদের জন্য খেলার মাঠসহ অনেক কিছু নির্মাণ করা হবে। এদিকে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের পরিবহন সংকট অনেকটা দূর হয়েছে। তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতা ও অর্জনের পাশাপাশি রয়েছে বেশকিছু সীমাবদ্ধতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ পথচলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তি অনেক কম।
পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও হলগুলোতে রয়েছে সিটের সংকট। এ ছাড়া হাতেগোনা কয়েকটি বিভাগ ছাড়া বেশির ভাগ বিভাগে হয় না গবেষণা। আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাতেও অনেক পিছিয়ে। আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনডেক্স ‘স্কোপাস’র তথ্য মতে, ১৯৭৪ সাল থেকে ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত জাবি থেকে ৮৯৮টি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে; গড়ে প্রতি বছরে ৭৮টি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি থেকে শুরু করে পরীক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট তৈরি করার সিস্টেম সনাতন পদ্ধতিতে হচ্ছে। অন্যদিকে ২৯ বছর ধরে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু)। এ ছাড়া একাধিক বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে রয়েছে ক্লাসরুম সংকট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার থেকে পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ায় অভিযোগও দীর্ঘদিনের। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে জাবি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট তৎকালীন সরকার এক অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার পূর্ব নাম জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে মিলিয়ে জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করেন। এরপর ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর রিয়ার আ্যাডমিরাল এসএম আহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট পাস হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়। তবে ২০০১ সাল থেকে এ দিনটিকে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।