• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ভাত দিতে দেরি করায় হোটেলে ভাঙচুর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের


ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩, ০৯:৩৩ এএম
ভাত দিতে দেরি করায় হোটেলে ভাঙচুর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের

ভাত দিতে দেরি করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন হোটেল মালিক পিন্টুকে মারধর ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরসহ তালাবদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকাল তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে বুধবার (১৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটক সংলগ্ন দোকানদারদের সংগঠন দোকানদার মালিক সমিতি।

অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের অনুসারী বলে জানা গেছে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, রাজনীতির দোহাই দিয়ে ইদানীং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের দোকানগুলোসহ শেখপাড়া বাজার, মধুপুর, লক্ষীপুর ও হরিনারায়ণপুর বাজারের দোকানদারদের সাথে খারাপ আচরণ করে চলেছে। এতে এলাকার জনমনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় সামান্য বিষয় নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষিত সন্তানদের সঙ্গে অশিক্ষিত শ্রমিকদেরও প্রতিনিয়ত ঝগড়া-ঝাঁটি বাঁধছে। আমরা শত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করে ছাত্র-ছাত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারবর্গের সেবায় ব্রত। তবুও রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু ছাত্র (বিশাল, তুষার, পিয়াস ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গ) এলাকার দোকানদারদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেই চলেছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে পিন্টুর হোটেলে ভাত ফুরিয়ে যাওয়ার অপরাধে ইবি থানার এসআইসহ শত লোকের সামনে তুষার (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, শিক্ষাবর্ষ: ২০১৩-১৪) ও তার দলবল হোটেল মালিক পিন্টুকে বেধড়ক মারপিট ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে হোটেল তালাবদ্ধ করে দেয়। এতে দোকানদার মালিক সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার দাবি করেন তারা। এ ছাড়া স্মারকলিপিতে পাঁচ দফা দাবি জানায় দোকানদার মালিক সমিতি।

পাঁচ দফা দাবি গুলো হলো- 
১. উক্ত ন্যক্কারজনক ঘটনার তদন্তপূর্বক সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। 
২. ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের সামনের ও ভেতরের দোকান, শেখপাড়া বাজার, মধুপুর ও হরিনারায়ণপুর বাজারের দোকানদারদের কাছ থেকে দ্রব্যাদি ক্রয় করে তাদের ন্যায্যমূল্য সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে। 
৩. এলাকার দোকানদারদের সঙ্গে বিনা কারণে কোনো ছাত্র-ছাত্রী খারাপ আচরণ করলে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিতে হবে। 
৪. পরিবহনের সঙ্গে ছাত্রদের ঝামেলা হলে তার আন্দোলন করার নামে মিল ও খড়ির আড়ত থেকে কোনো প্রকার খড়ি ও ডালপালা আনতে পারবে না। প্রতিবাদের সময় রাস্তায় আগুন দেওয়ার নামে দোকানের সাইনবোর্ড তুলে এনে আগুন দিতে পারবে না। 
৫. রাজনৈতিক দলের দোহাই দিয়ে কেউ কোনো প্রকার অশান্তি সৃষ্টি করলে তার দায়-দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে।

এদিকে ঘটনার পরের দিন বুধবার আবারও দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় শিক্ষার্থী ও দোকানদারদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

হোটেল মালিক পিন্টু বলেন, “খাবার দিতে দেরি করায় দোকানের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে তারা। খাবারের চামচ দিয়ে আমাকে মারধরও করেছে। পরে দোকান খুললে আবারও মারার হুমকিও দেন ওই শিক্ষার্থীরা।”

হোটেল মালিককে মারধর ও ভাঙচুরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত তুষার বলেন, “আমরা আগে খাবার চাওয়ার পরও যারা পরে খাবার খেতে এসেছিল তাদের খাবার দেওয়া হয়। এ নিয়ে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। তবে আমি হোটেল ভাঙচুর ও মারধর করিনি।”

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটি হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে হোটেল মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি।”

Link copied!