ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজার কনসার্টকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত এক ছাত্রলীগ কর্মীকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা সম্পাদক স্বাগতম বড়াই।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
আইসিইউতে ভর্তি ছাত্রলীগ নেতার নাম অপূর্ব চক্রবর্তী। তিনি ঢাবির জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফমেন্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী।
স্বাগতম বড়াই বলেন, “অপূর্ব চক্রবর্তী কথা বলতে পারছেন না। মাথায় আটটি সেলাই লেগেছে, কপালেও সেলাই লেগেছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে ডাক্তার দেখাশোনা করছেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসাসহ সার্বিক পর্যবেক্ষণ চলছে।”
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কনসার্টে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত চলে যাওয়ার সময় ইনানের অনুসারী হলটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশী গণেষ ঘোষের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এটা নিয়ে গনেশ সৈকতের কাছে ক্ষমা চায়। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা চলে যাওয়ার পর হল মাঠে ইনানের গ্রুপ ও সৈকতের গ্রুপ বিষয়টি নিয়ে ঝামেলায় জড়ায়। এর জের ধরে লাঠিসোটা নিয়ে রাত ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। পরে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে মধুর ক্যান্টিনে ইনানের কাছে অপূর্ব বিচার দিতে আসলে সেখানেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অন্য আহতরা হলেন সৈকতের পলাশ রায় সৌরভ, পল্লব মণ্ডল, অর্পণ কুমার বাপ্পি, বিপ্লব পাল, বর্ষণ রয়, কার্তিক কুমার এবং ইনানের অনুসারী শ্রীরূপ কুন্ডু, অপূর্ব, অভি, রিদ্ধি, ধ্রুব, চিন্ময় ও প্রিতম।
সংঘর্ষে অপূর্ব চক্রবর্তীর মাথা ফেটে যায়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে তার মাথায় আটটি সেলাই দেয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়।
ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, জগন্নাথ হলের ঘটনার পর বিষয়টি আমি মীমাংসা করে দিয়ে আসি। পরে আমার গ্রুপের সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে হলের অন্যান্য কয়েকটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য মধুর ক্যান্টিনে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে আমার কর্মীরা বিচার দিতে গেলে তার সমর্থকরা আবারও পলাশ এবং অপূর্বসহ কয়েকজনকে মারধর করে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি খোঁজ নিতে বলেছি। এমন কিছু হয়ে থাকলে বিস্তারিত জানার পর আমরা দেখব, কে অপরাধী। অপরাধী যেই হোক না কেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মিহির লাল সাহা বলেন, শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাবুঝিতে কিছু বিশৃঙ্খলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিষয়টি উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :