• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২, ০১ মুহররম ১৪৪৬

আষাঢ় এলেই কপাল পুড়ে মাঝিদের


বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম
আষাঢ় এলেই কপাল পুড়ে মাঝিদের
পাড়ে বাঁধা নৌকা। ছবি : প্রতিনিধি

ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। নদের স্বচ্ছ জল, পাল তোলা নৌকা আর দুই ধারের কাশফুলের ঘাস প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাকৃবির সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই পাকা দালানে বন্দী মানুষজন একটু শান্তির আশায় ছুটে আসেন বাকৃবির নদীর ঘাটে। বিশেষ করে ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের থাকে উপচেপড়া ভিড়। সবাই ব্যস্ত নৌকায় জলকেলিতে মেতে উঠতে। নদের অপর পাড়ে চড়‌বিলাই‌ক্কে নামক গ্রাম থাকায় প্রায় সময়ই থাকে যাতায়াত।

তবে আষাঢ় এলেই যেন কপাল পুড়ে ওইসব নৌকার মাঝিদের। এ সময় মুষলধারে বৃষ্টির কারণে নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যায়, আর প্রবল স্রোতের সঙ্গে বয়ে চলে বিশাল ঢেউ। তখন কেউ আর নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় উঠতে রাজি হয় না। ফলে একেবারে ভাটায় পড়ে যায় মাঝিদের রোজগার। যেখানে শুষ্ক মৌসু‌মে একদিনে হাজার টাকার মতো আয় হতো, সেখানে এখন আয় হয় মাত্র শ-খানেক।

নদের ঘাটে ঘুরে দেখা যায়, মা‌ঝিরা নৌকায় অলসভা‌বে ব‌সে আছেন। নদে বইছে প্রবল স্রোত। পাড়ে বাঁধা দশ‌টি নৌকা। লোকজন পাড়ে দাঁড়িয়ে শুধু দূর থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। একজন মাঝি তখনো আশায় বুক বেঁধে হাঁকডাক করছেন নৌকায় ওঠার জন্য, কিন্তু কেউ তার ডাকে সাড়া দিচ্ছে না।

নদের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা নৌকা ভ্রমণ উপভোগ করেন ঠিকই, তবে নদীতে প্রবল স্রো‌তের টান কেউ কাঠের ডিঙি নৌকায় উঠতে সাহস পান না। কারণ একবার নৌকাটি উল্টে গেলে কিংবা নৌকা থেকে পড়ে গেলে প্রাণহানির সম্ভাবনা বেশি।

নৌকার মাঝি হাসান বলেন, “দুই লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ডিঙি নৌকা বানিয়েছিলাম সংসার চালানোর আশায়। আষাঢ়ের আগ পর্যন্ত রোজগার ছিল দৈনিক হাজার টাকার মতো, অথচ এখন তা নেমে এসেছে দুই-তিনশ টাকায়। যতটুকু রোজগার হয়, তা ঘাটে বসেই খাওয়া-দাওয়ায় শেষ হয়ে যায়। তবে নদীর স্রোত কমলে রোজগার একটু বাড়তে পারে।”

আরেক মাঝি আবুল মিয়া বলেন, “এখন আর নৌকা চালানোর আগ্রহ নেই। ভাবছি নৌকাটি ভেঙে ফেলে অন্য কোনো পেশায় চলে যাব। নৌকা চালিয়ে আর সংসার চলে না। দিন দিন জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ছে। এখা‌নে বে‌শিরভাগ নৌকা হাত বৈঠার সাহা‌য্যে চ‌লে। ফ‌লে ওই পা‌ড়ে যাওয়াও ক‌ঠিন।”

Link copied!