ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে আগ্রহ আর উন্মাদনা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। অন্যান্য এলাকার মতো মোংলার গ্রামগঞ্জেও শিশু থেকে বৃদ্ধদের আগ্রহের কমতি নেই বিশ্বকাপ নিয়ে। কেউ কেউ বাড়িতে ওড়াচ্ছেন পছন্দের দলের পতাকা। স্কুলপড়ুয়া কিশোরদের দীর্ঘ পতাকা টাঙানোর প্রতিযোগিতাও চলছে। টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পতাকা টাঙানোর সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে তারা।
ফুটবল বিশ্বকাপের এ উন্মাদনা ছড়িয়েছে সুন্দরবনেও। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনের গহিনে টাঙানো হয়েছে আর্জেন্টিনার পতাকা।
সোমবার (২১ নভেম্বর) মোংলার সুন্দরবন লাগোয়া জয়মনি গ্রামে এ দৃশ্য দেখা যায়।
বিষয়টিকে বাড়াবাড়ি না দেখে উন্মাদনা হিসেবে অবহিত করেছেন সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ ওবায়দুর রহমান।
স্থানীয় পল্লি চিকিৎসক টুকু বলেন, “বিশ্বকাপ এলে এখানকার আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সমর্থকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সেই সূত্র ধরেই আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা এ কাজ করেছেন।”
এলাকার বাসিন্দা আমিনুল বলেন, “এখানকার মানুষ বাঘ–কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকে। তাই গহিন বনে যেতে ভয় করে না। আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙানোর বিষয়টি দলের প্রতি ভালোবাসার প্রাধান্য পেয়েছে।”
মোংলার কিশোররা জানায়, গত বিশ্বকাপ থেকে তারা আর্জেন্টিনার ভক্ত। এর আগে ছোট থাকায় দলকে সাপোর্ট করা বুঝত না। তবে গত খেলা থেকে দলকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের দেখেই এসব শিখেছে তারা।
স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র জানায়, টাকা জমিয়ে সবাই মিলে বড় পতাকা তৈরি করেছে, যা রাস্তার পাশে টাঙানো হবে। এ ছাড়া বিশ্বকাপ দেখতে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করবে সবাই মিলে। বড়রা সহযোগিতা করলে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বাড়ির উঠানে খেলা দেখা যাবে। এ জন্য প্রস্তুতিও চলছে।
বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে প্রতিবছরই মোংলায় উৎসব বয়ে যায়। গ্রামে গ্রামে একত্রে খেলা দেখার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন দলের সমর্থক-ভক্ত, বাজার কমিটি, তরুণদের সংগঠন বড় পর্দায় খোলা মাঠে খেলা দেখার আয়োজন করেন। তা ছাড়া পতাকা টাঙানোর হিড়িক পড়ে যায় বাড়িতে, বাজারে, সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে।
এ সময় মৌসুমি পতাকা বিক্রেতাদের পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের পতাকা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।