• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দ্বীপচরের মানুষের মনে সুখ নেই


শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২, ০২:২৪ পিএম
দ্বীপচরের মানুষের মনে সুখ নেই

বৃত্তাকার ছায়া সুনিবিড় গ্রাম। চারপাশে প্রশস্ত খাল। গ্রামের নাম দ্বীপচর। বাগেরহাটের এই গ্রামে তিন শতাধিক পরিবারের বাস। অন্য অঞ্চলের সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ১৫০ ফুটের স্লিপার পোলটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকায় নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

এখানে আছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুটি মসজিদ। আর আছে বিস্তীর্ণ কৃষি জমি। গ্রামের চারপাশের খালগুলো স্বাদু পানিতে ভরে থাকায় মানুষ যার যার জমিতে সারা বছর নানা রকমের চাষাবাদে ব্যস্ত থাকেন। বছরজুড়ে ফসল ফলানোর জন্য দ্বীপচর গ্রামটি উপজেলার কৃষিপল্লী হিসেবে বিশেষ পরিচিতিও পেয়েছে।

এই দ্বীপচর থেকে লোকালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ওই স্লিপার পোল। এর ওপর দিয়ে সাধারণ মানুষ রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা গ্রাম হয়ে উপজেলা সদরে আসা যাওয়া করতেন। কৃষিপণ্য পাঠানো হতো উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার ও পার্শ্ববর্তী বাংলাবাজারে। পাশাপাশি এসব বাজারের পাইকার ব্যবসায়ীরা কৃষিপণ্য কেনার জন্য ছুটে যেতেন কৃষিপল্লী দ্বীপচরে। চাষিরা তখন ফসল ফলিয়ে ভালো বাজারমূল্য পেয়ে সচ্ছলতায় ছিলেন। কিন্তু সেই দিন এখন অতীত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যোগাযোগের প্রধানতম মাধ্যম স্লিপার পোলটি ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে। কৃষিপণ্য পরিবহন দূরে থাক, চলাচলই প্রায় অসম্ভব।

গ্রামের চাষি ফজলু খান ও রবিউল ইসলাম বলেন, “পোলটি ভেঙে পড়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে। বাজারে পণ্য পাঠাতে পারি না। তাই উপযুক্ত দাম না পেয়ে অনেকেই ক্ষতির মুখে পড়ে চাষাবাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না।”

মনির সওদাগর বলেন, “কয়েক দিন আগে গ্রামের মানুষ নিজেদের খরচে কিছু অংশে কাঠ দিয়ে মেরামত করেছিল। তাও আবার ভেঙে পড়েছে।”

গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা মোফাজ্জেল হোসেন সওদাগর ও বাচ্চু তালুকদার বলেন, “একটি পোলের অভাবে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ দিন পোলটি চলাচলের অযোগ্য।”

গ্রামের বাসিন্দা শরণখোলা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রেক্সোনা দেলোয়ার বলেন, “বর্তমান সরকারের সময় সারাদেশে উন্নয়নের উৎসব চলছে। ঠিক সেই সময় এই পোলের এ দুরবস্থা সত্যি দুঃখজনক।”

দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে শরণখোলা উপজেলা প্রকৌশলী ফেরদৌস আহমেদ বলেন, “সংস্কার না হওয়ায় ১৫০ ফুট স্লিপার ব্রিজটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এখানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।”

Link copied!