• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

সুগার মিলের আগুন নেভাতে আরও তিন দিন সময় লাগতে পারে : ফায়ার সার্ভিস


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম
সুগার মিলের আগুন নেভাতে আরও তিন দিন সময় লাগতে পারে : ফায়ার সার্ভিস

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকায় এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের গুদামে লাগা আগুন এখনো পুরোপুরি নেভেনি। দাহ্য পদার্থ থাকায় গুদামের ভেতরের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নেভাতে আরও তিন দিন সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম ডি আবদুল মালেক এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে যতটুকু ফায়ার সেফটি প্রয়োজন ততটুকু এস আলম সুগার মিলে ছিল না। বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফায়ার সেফটি আরও বেশি ভালো থাকার দরকার ছিল।”

একই কথা বলেছেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, চিনির কাঁচামালগুলো দাহ্য পদার্থ। সেগুলো না সরানো পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব নয়। ফলে আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে তিন দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, “আগুন নির্বাপণে অনেক দূর থেকে পানি আনতে হয়েছে। এখানে রিজার্ভভারগুলো আরও কাছে থাকলে ভালো হতো। যে রিজার্ভভারটি কাছে পেয়েছি তা একটু ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে এখানে ফায়ার হাইড্রেন্ট দরকার। ফায়ার হাইড্রেন্টগুলো থাকলে এতো বেগ পেতে হতো না। আগুন নেভাতে আরও সহজ হতো। এখানে ফায়ার সেফটি ইনসিকিউরড।”

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, “গুদামের ভেতরে ১২০০ থেকে ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আগুন জ্বলছে। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঢুকতে পারছেন না। কারণ আগুনের তাপমাত্রা বেশি। ফলে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি আগুন কীভাবে লেগেছে তাও এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতেরও খবর পাওয়া যায়নি।”

এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক বলেন, “গুদামে ব্রাজিল থেকে আমদানি করা এক লাখ টন চিনির কাঁচামাল ছিল। এর পুরোটাই পুড়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছি।”

এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের পাওয়ার প্লান্টের সহকারী ফিটার মনির বলেন, “গুদামে প্রায় এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। এগুলো পুড়ে গেছে। কাছেই পরিশোধিত চিনি আছে আরও কয়েক লাখ টন। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও থাইল্যান্ড থেকে চিনির কাঁচামাল এনে এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের দুটি প্লান্টে পরিশোধন করা হয়। এর মধ্যে প্লান্ট-১ এর উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৯০০ টন। প্লান্ট-২ এর উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ টন। থাইল্যান্ড ও ফ্রান্সের প্রযুক্তি ও কারিগরি সহায়তায় কারখানাটি পরিচালিত হচ্ছে।”

কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাত জানান, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের আগুন নির্বাপণকাজে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ১০০ সদস্য, নৌবাহিনীর ১২ সদস্যের দুটি টিম, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সহযোগিতা করছেন।

এর আগে, সোমবার (৪ মার্চ) বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় অবস্থিত কারখানার চারটি গুদামের মধ্যে একটি আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরাও।

আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা। কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

Link copied!