পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের চৌবাড়ীয়া হারোপাড়া মহল্লার দর্জি হাসিনুর রহমান হাসু হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিমন সরকারকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে নিহত হাসুর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি শাবল, একটি দা ও মাটিতে পুঁতে রাখা তাবিজ জব্দ করে পুলিশ।
এর আগে, শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিমন এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। দর্জি হাসিনুর রহমান হাসুর বাড়ির সামনে মাটিতে একটি তাবিজ পুঁততে গিয়েছিলেন রিমন। তাবিজ পোঁতা শেষে তাকে দেখে ফেলেন হাসু। রিমনকে ঘরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্য়ায়ে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এ সময় নিজেকে বাঁচাতে ঘরে থাকা শাবল দিয়ে হাসুর মাথায় আঘাত করেন রিমন। পরে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে বাড়ির পেছনে মাটির মেঝে কেটে পথ তৈরি করে পালিয়ে যান। পরদিন দুপুরে তালাবদ্ধ ওই ঘর থেকে দর্জি হাসিনুর রহমান হাসুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।”
ওসি আরও বলেন, “দর্জি হাসিনুর রহমান তার স্ত্রী সাজেদা খাতুনকে কিছুদিন আগে তালাক দেন। তাদের সংসারে সন্তানও রয়েছে। তালাকের পর থেকে সাজেদা খাতুন নানাভাবে চেষ্টা করছিলেন হাসুর সংসারে ফিরে যাবার। এমন অবস্থায় তিনি এক কবিরাজের মাধ্যমে স্বামীকে বশে আনতে একটি তাবিজ নিয়ে আসেন। সেই তাবিজটি তার ছোট বোনের স্বামী রিমন সরকারকে দিয়ে হাসিনুরের বাড়ির মাটিতে পুঁতে রেখে আসতে বলেন। তার কথা মতই তাবিজ পুঁতে রাখতে দর্জি হাসিনুরের বাড়িতে যায় রিমন।
ওসি রাশিদুল আরও বলেন, “এ ঘটনায় গত ১৭ আগস্ট রাতে নিহতের ছেলে রেজাউল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ এর রহস্য উদঘাটনে তৎপরতা চালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হাসিনুরের ফোনে সিম তুলে রিমনের কথা বলার সুত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত শাবল ও দা। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। সেইসঙ্গে হাসিনুরের সাবেক স্ত্রী সাজেদা খাতুনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”