• ঢাকা
  • সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩০, ১২ শা'বান ১৪৪৬

ভবানী রানীর মহানুভবতা


মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২১, ১০:৪০ এএম
ভবানী রানীর মহানুভবতা

জনপ্রতিনিধিদের কাছে দিনের পর দিন ঘুরে, ঘুষ দিয়েও যেখানে অনেকে সরকারি ভাতার কার্ড পাচ্ছেন না, সেখানে বিধবা ভাতার কার্ড পেয়েও তা ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মাগুরার ভবানী রানী বসু নামের এক নারী। বর্তমানে তার খাওয়া-পরার অভাব না থাকায়, তিনি চান তার এ কার্ডটি প্রকৃতি অভাবী কোনো বিধবা নারীকে দেওয়া হোক। 

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের মাশালিয়া গ্রামের ভবানী বানী বসু বলেন, মধ্য বয়সে আট সন্তান নিয়ে তিনি বিধবা হন। সে সময় সম্বল বলতে তার ছিল স্বামীর রেখে যাওয়া বসতবাড়ি, আর মাত্র এক বিঘা ফসলি জমি। আট সন্তান নিয়ে তিনি যখন চরম আর্থিক সংকটে ছিলেন, তখন একটি বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য ঘুরেছেন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। কিন্তু তখন তার কপালে জোটেনে কোনো ভাতার কার্ড। পরে ২০১৯ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর স্থানীর প্রতিনিধি তাকে একটি বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়। কিন্তু তত দিনে তার সন্তানেরা কেউ কৃষিকাজ করে, কেউবা ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরি করে সংসারের অভাব-অনটন দূর করেছেন। এ অবস্থায় তিনি এক মাসের ভাতার টাকা না তুলে সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি সদস্যের কাছে ভাতার কার্ডটি ফেরত দেন। তিনি চান তার এ কার্ডটি প্রকৃত অভাবী কোনো নারীকে দেওয়া হোক। যার খাওয়া-পরার অভাব আছে।       

স্থানীয় গয়েশপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ আফসার উদ্দিন বলেন, অভাবের সময় ভবানী রানী ভাতার কার্ড পাননি। পরে পেলেও সংসারে সচ্ছলতা ফেরায় তিনি কার্ড ফেরত দিয়েছেন। তিনি তার এ কার্ডটি প্রকৃত অভাবী বিধবা নারীকে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।                                                        

ভবানী রানীর এই মহানুভবতায় গর্বিত তার সন্তান নাড় গোপাল বসু। তিনি বলেন, যেখানে মানুষ টাকা নিয়ে একটি কার্ডের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে ছুটছেন, সেখানে তার মা ভাতার কার্ড পেয়েও ফেরত দিয়েছেন। এমন মায়ের সন্তান হিসেবে তিনি গর্ববোধ করেন। 

প্রতিবেশীরাও ভবানী রানু বসুর এই উদার মানসিকতায় গর্বিত। শঙ্কর দাস, আলমগীর হোসেনসহ একাধিক প্রতিবেশী বলেন, ভাতার কার্ড ফেরত দিয়ে তাদের গ্রামের মানসম্মান উজ্জ্বল করেছেন।

শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওয়াসিম আকরাম বলছেন, যাদের ভাতার প্রয়োজন নেই, তারা ভাতার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে, ভাতা ভোগ করছে। অথচ ভবানী রানীর সংসারে সচ্ছলতা ফেরায় তিনি ভাতার কার্ড ফেরত দিয়েছেন। ভবানী রানীর কাছ থেকে এ সমাজের মানুষদের অনেক কিছু শেখার আছে।


  

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!