লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৪০জন কৃষকের নামে প্রায় এক কোটি টাকা ঋণের টাকা আত্মসাৎ করেছেন আজিজুর রহমান নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। টাকা ফেরত ও ওই ব্যাংক কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার রাজশাহী কৃষি ব্যাংক হাতীবান্ধা শাখার সামনে ঘন্টাব্যাপী এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত আজিজুর রহমান ওই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (মাঠ)।
মানববন্ধনে বক্তব্যে কৃষকেরা বলেন, “ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান প্রতারণা করে আমাদের প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ব্যাংকে আসছেন না। লিখিত অভিযোগ করেও আমরা কোনো সুফল পাচ্ছি না।”
এসময় ভুক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। একই সঙ্গে দ্রুত তাদের ঋণের টাকা ফেরত না দিলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দেন তারা।
উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের ভুক্তভোগী কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, “আমার জায়গা জমির সকল কাগজপত্র ব্যাংকের কাছে জমা দিয়ে তিন লাখ টাকা ঋণের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু ওই ব্যাংক কর্মকর্তা ৩ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা বলে আত্মসাৎ করেছেন। ব্যাংকের ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আজিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সেটি ধরেননি।
এদিকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, “৪০ জন গ্রাহক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি গত ১ মাস ধরে ব্যাংকে আসছেন না। তাকে বার বার অফিসে আসার নোটিশ দিয়েও অফিসে আনতে পারিনি।”
এ বিষয়ে ব্যাংকটির লালমনিরহাট জোনাল ম্যানেজার মাহিদুল ইসলাম বলেন, “আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তিনি অফিস করছেন না এবং আমাদের সাথে যোগাযোগও করছেন না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।”
এক যোগে পাওয়া ওই ৪০ জন কৃষকের নামে করা ঋণের টাকা আত্মসাৎ করেন ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান। ব্যাংকে খবর নিয়ে গ্রাহকরা জানতে পারেন তাদের নামে ঋণের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পরে অভিুযক্ত ব্যাংক কর্মকর্তাকে টাকার জন্য চাপ দিলে তিনি কৌশলে কয়েকজনকে অল্প কিছু করে টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা সময় নিলেও সেই সময় পেরিয়ে যায়। পরে টাকা ফেরত না পেয়ে গ্রাহকরা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।