প্রতিবছরই ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রস্তুত করা হয় বিশেষ বিশেষ কোরবানির পশু। এই বিশেষ পশুগুলোর নানান নাম রাখা হয় ক্রেতাসাধারণের আকর্ষণীয় করার জন্য। ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা শেষ মুহুর্তে পশুগুলোকে বাড়তি যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউবা আবার বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন। পশুর আকার ও ওজন দেখে হচ্ছে দামের কম-বেশি। যার গরু সবচেয়ে বড় ও ওজনে বেশি তার গরুর দাম বেশি। সবচেয়ে বড় ও বেশি দামের গরু দেখতে প্রতিবার কোরবানিতে থাকে দেশবাসীর আগ্রহ।
গত কয়েকদিন ধরে সারা দেশের মতো ময়মনসিংহেও বড় গরু নিয়ে চলছে আলোচনা। এবার কোরবানি ঈদে জন্য আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালের ‘কালো মানকি’।
প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা, সাধারণ জনগণ ভিড় জমাছেন ‘কালো মানিককে’ দেখার জন্য।
জানা গেছে, চার বছর ধরে ফ্রিজিয়ান ষাঁড়টি পালন করছেন ত্রিশাল উপজলোর ধানীখোলা ইউনিয়নের জাকির হোসেন সুমন। গত বছর কোরবানি ঈদের আগে ষাঁড়টির নাম দিয়েছিলেন ‘কালো মানকি’।
জাকির হোসেন সুমন বলেন, ২০১৭ সালে ফ্রিজিয়ান জাতের কালো রঙের গরুটি কিনেন। গরুটি লম্বায় ১০ ফুট আর উচ্চতা ৫ ফুট। মাংস হবে প্রায় প্রায় এক হাজার ৫০০ কেজি। গরুটি পালনে সারাদিন দুজন লেগেছে। নিয়মিত দেখাতে হয়েছে চিকিৎসক। খাবার হিসাবে দেওয়া হয় খৈল ভুষি, খড়, কাঁচা ঘাস, ভুট্টা এবং সয়াবিন। এতে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
তবে করোনার কারণে সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে গরুটির মালিক সুমনের।
সুমন জানান, কোরবানিকে সামনে রেখে গরুটির দাম চেয়েছেন ৩০ লাখ টাকা। কিছু কম হলেও বিক্রি করে দেবেন। কিন্তু করোনার ভয় তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। গরুটি লালন-পালনে তার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ হয়ছে। পাইকাররা দাম হাঁকচ্ছেন ১২-১৫ লাখ টাকার মতো।
পশু চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, “‘কালো মাকিনকে’ প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে লালন পালন করা হয়েছে। অনেক সময় বড় গরুগুলোকে ঈদের আগে স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য ভেজাল ওষুধ খাওয়ানো হয় এতে অনেক সময় গরু মারা যায়। ‘কালো মানিককে’ শুরু থেকে প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়েছে।”
স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, ‘কালো মানিক’ সারা দেশের আর্কষণীয় গরুগুলোর মধ্যে এটা একটা। এবছর ময়মনসিংহ জেলায় এত বড় গরু এখনো আমার চোখে পড়ে নাই। আমি প্রতি বছর ঈদে বড় গরু কেনাবেচা করি, এবছর কয়েকটা কিনেছি, করোনার কারণে এবছর বড় গরুর দাম কিছুটা কম, এই গরুটা দেখতে সুন্দর দাম দরে ঠিক হলে আমি নেব।
জেলা প্রাণী সম্পদ র্কমর্কতা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, এবছর করোনা মহামারির কারণে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনলাইনে পশু বিক্রিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এতে গবাদিপশু পালনকারীরা ন্যায্য মূল্য পাবেন।
বিভাগীয় কমিশনার শফিকুল রেজা বিশ্বাস বলেন, আমাদের দেশে সবাই হাটে গবাদিপশু বেচাকেনা করতে স্বস্তিবোধ করেন, কিন্তু করোনার কারণে এবছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে হাট বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবে অনলাইনে পশু বেচাকেনার তৎপরতা চালানো হচ্ছে।