অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন গত শুক্রবার (৪ মার্চ) থাইল্যান্ডের কো সামুই দ্বীপের একটি প্রাইভেট ভিলায় মারা যান। এই স্পিন জাদুকরের আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব এখনও শোকে কাতর। যার কারণে ওয়ার্নের জীবনে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা, রেকর্ড, ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয় মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরেও গণমাধ্যমের কেন্দ্রবিন্দুতে।
জীবনের অধিকাংশ সময়ই আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে কাটানো এই ক্রিকেট কিংবদন্তির একটি মানবিক বিষয় নতুন করে অস্ট্রেলিয়াসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে।
ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির শুরুর দিকের। বিশ্ব যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করছিল, ঠিক সেই সময়ে শেন ওয়ার্ন তার নিজের মদ তৈরির কারখানায় মদ উৎপাদন বন্ধ করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল।
ওয়ার্ন তার মদ তৈরির কারখানার নাম দিয়েছিল 'সেভেন জিরো এইট জিন', যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ৭০৮ উইকেটের সাফল্যের সঙ্গে মিলিয়েই রেখেছিলেন।
২০২০ সালে সারাবিশ্বে করোনার প্রকোপ যখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল, ঠিক সেই সময় ওয়ার্ন তার নিজের কারখানায় মদ উৎপাদন বন্ধ করে স্যানিটাইজার উৎপাদনের উদ্যোগ নেন। সেই বছরের ১৭ মার্চ থেকে তার কারখানায় মদের বদলে ৭০ শতাংশ অ্যালকোহল দিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি হয়। তার কারখানায় উৎপাদিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করোনা হাসপাতালগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল।
ওই সময় শেন ওয়ার্ন জানিয়েছিলেন, "এই সময়টা আমাদের জন্য খুবই কঠিন সময়। এখন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে, মানুষের জীবন বাঁচাতে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে যেভাবে পারি সাহায্য করা উচিৎ। আমার খুব খুশি লাগছে যে, আমার সেভেন জিরো এইট কোম্পানি সেই কাজটি করছে। মদের বদলে স্যানিটাইজার তৈরি করছি আমরা। অন্যদেরও অনুরোধ করছি- সম্ভব হলে এমন কিছু করুন।"
হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ছয়দিন পর বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ওয়ার্নের মরদেহ অস্ট্রেলিয়ান সময় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে মেলবোর্নের এসেনডন ফিল্ড এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌঁছায়। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পতাকা গায়ে এক প্রাইভেট বিমানে তাকে শেষবার দেশে আনা হয়। আগামী ৩০ মার্চ ঐতিহাসিক মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ওয়ার্নের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এমসিজি।