লিওনেল মেসিকে ঈশ্বর যেন সব কিছু দিয়েছে দুহাত ভরে। যা চেয়েছে ফুটবলের মাঠে তাই পেয়েছে ক্ষুদে জাদুকর। অপূর্ণতা ছিল বিশ্বকাপ জেতার, সেটাও পূরণ হয়েছে ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে। আর সেই সাফল্যটাই তাকে এনে দিয়েছে আরও একটি ব্যালন ডি’অরের খেতাব। অষ্টমবারের মতো লিওনেল মেসি জিতলেন এই পুরস্কার। পিছনে ফেলেছেন এ সময়ের অন্যতম দুই তারকা আর্লিং হল্যান্ড ও কিলিয়ান এপবাপ্পেকে। আইভরি কোস্টের কিংবদন্তি ফুটবলার দিদিয়ের দ্রগবার সঙ্গে পুরস্কার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফরাসি সাংবাদিক ও উপস্থাপক স্যান্ডি হেরিবার্ট। আলাদাভাবে নজর কাড়েন টেনিস মহাতারকা নোভাক জোকোভিচের উপস্থিতি।
মেসির ৮ম ব্যালন ডি’অর জেতার ঘোষণা দেন ইংলিশ কিংবদন্তি ডেভিড বেকহাম। যিনি মেসির বর্তমান ক্লাব ইন্টার মিয়ামির মালিকও।
এই ক্ষুদে জাদুকরের নাম ঘোষণার পরপরই সবাই দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে তাকে সম্মান জানান। পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মেসি বলেন, “মুহূর্তটা উপভোগের জন্য এখানে আরেকবার উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। বিশ্বকাপ জেতাটা ছিল আমার স্বপ্ন। এটা খুবই বিশেষ ব্যাপার ছিল যে, অন্য দেশের মানুষরাও চেয়েছে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতুক।”
নিজের অর্জন নিয়ে মেসি আরও বলেন, “আমার এমন ক্যারিয়ার আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি যা অর্জন করেছি তা করার জন্য আমার ভাগ্য দারুণ সুপ্রসন্ন ছিল। আমি বিশ্বের সেরা দলে খেলেছি, ইতিহাসের সেরা দলে খেলেছি। এটা আমার জন্য ট্রফি জেতা এবং ব্যক্তিগত পুরস্কার জেতার কাজটাকে সহজ করেছে।”
অনেকটা আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল পুরস্কারটি জিতবেন লিওনেল মেসি। তার ভক্ত- সমর্থকরাও চেয়েছিলেন মেসিই যেন পায় ব্যালন ডি’অর। যতটা আগ্রহ ছিল তার ভক্ত সমর্থকদের ততোটা আগ্রহ ছিল না মেসির। কোনো আগ্রহ ছিল না তার ব্যালন ডি’অর নিয়ে। মেসি বলেছিলেন, “সত্যি হচ্ছে, এটা নিয়ে আমি অতটা ভাবছি না। যদি পুরস্কারটা পাই, ভালো। আর যদি না পাই, কিছুই আসে যায় না।”
কেন এমনটা বলেছিলেন এলএমটেন। তারও ব্যাখ্যা দিলেন পুরস্কার জয়ের পর। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক বলেন, “আমি আমার ক্যারিয়ারে এটা অনেকবার বলেছি যে ব্যালন ডি’অর গুরুত্বপূর্ণ একটা পুরস্কার। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এটা সবচেয়ে সুন্দর পুরস্কার। কিন্তু আমি কখনোই এটাকে অতটা গুরুত্ব দিইনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল দলীয় অর্জন।”
গতকাল (সোমবার) ছিল ফুটবল ঈশ্বর ডিয়েগো ম্যারাডোনার জন্মদিন। মঞ্চে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ভুলেননি লিও। লিও বলেন, “ডিয়েগোর নামটা বলতে চাই। এখানে যারা আছেন, সবাই ফুটবলকে ভালোবাসেন, ডিয়েগোর মতো। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা নেই। যেখানেই থাকুন না কেন, শুভ জন্মদিন। এটা আপনার জন্যও। আমি এই পুরস্কার আপনি ও সব আর্জেন্টাইনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চাই।”