• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

অসময়ে বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে : ডিএনসিসি মেয়র


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২, ০৭:০৭ পিএম
অসময়ে বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে : ডিএনসিসি মেয়র

অসময়ে বৃষ্টি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, “ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। এখানে করোনা রোগী এবং ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা জোনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা আছে।”

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে চলমান পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা প্রদানের জন্য মহাখালীতে ডিএনসিসির কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল পরিবর্দশনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিদর্শনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এসময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং ডিএনসিসি মেয়র হাসপাতালটি ঘুরে দেখেন। এ ছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং খোঁজখবর নেন তারা।

আতিকুল ইসলাম বলেন, “করোনা মহামারির সময়ে মানুষকে চিকিৎসা দিতে আমরা ডিএনসিসির মার্কেটকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করি। মার্কেট থেকে আমরা ২০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ করতে পারতাম। টাকার দিকে না তাকিয়ে মানুষের সেবার দিকে গুরুত্ব দিয়ে ২৫৮টি দোকানের বরাদ্দ বাতিল করে দেই। এক হাজার বেড সম্পন্ন হাসপাতালটি নির্মাণ করি। এখানে ২১২টি আইসিও বেড রয়েছে। করোনা রোগীর সংখ্যা এখন অনেক কম। আমরা এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেছি।”

ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার আহ্বান করে মেয়র বলেন, “জনগণের চিকিৎসা সেবা বাড়াতে ডিএনসিসি এলাকায় ৫৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তর করা হবে। ৫৪টি ক্লিনিকে জনসাধারণ প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করবে। AIIB (Asian Infrastructure Investment Bank) এর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ৫৪টি ক্লিনিক নির্মাণে অর্থায়ন করতে রাজি হয়েছে AIIB। প্রকল্প প্রণয়ন করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।”

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতনতা সবেচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছি। অভিযান পরিচালনা করছি। দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু বাড়িতে বা নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পাওয়ায় জরিমানা করে আসার কিছুদিন পর অভিযান চালালে আবারও লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এখন থেকে আর ছাড় নেই। কোন ভবনে দ্বিতীয়বার লার্ভা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করতে এবং অন্যান্য সমস্যা জানতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শুরু করেছেন বলেও জানান ডিএনসিসি মেয়র।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, “ডেঙ্গু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতা কার্যক্রম ও অভিযান চলমান থাকবে।”

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, “ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল এখন ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য তৈরি রয়েছে। এক হাজার শয্যার মধ্যে ছয়জন কোডিভ রোগী আলাদাভাবে সেবা নিচ্ছে। এ হাসপাতালে ১০৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে এবং আরও প্রায় ৪০০ শয্যা ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”

তিনি বলেন, “ডেঙ্গুর চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি নেই। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সবাই মিলে এক সঙ্গে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করতে হবে।”

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, “সিটি করপোরেশনের মেয়ররা এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ-বরাদ্দ, জনবল, অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটসহ যখন যা চেয়েছেন তা-ই সরবরাহ করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য যা যা করণীয় তার সব করা হয়েছে। টিভিসি তৈরি করা হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি চলমান থাকবে।”

পরিদর্শনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম শফিকুর রহমান এবং ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক প্রমুখ।

Link copied!