অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির জন্য রাজধানীর গুলশানে জড়ো হলো হাজারো মানুষ। এসময় অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে শপথ নেন তারা
শনিবার (১৭ নভেম্বর) গুলশান-২ গোলচত্বরে ( ল্যান্ডমার্ক কর্নার ) অগ্নিসন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সংগঠন অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ ‘জেগে ওঠো শান্তির পথে’ শীর্ষক এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সার্বিক সহযোগিতা করে গতিপথ তথ্য ও গবেষণা সংস্থা।
অনুষ্ঠানের মাঝে শান্তির জন্য সঙ্গীত পরিবেশন করেন ক্লোজআপ ওয়ান তারকা রাজীব ও আবিদ অমি। কর্মসূচিতে অংশ নেন অগ্নিসন্ত্রাসে নিহতদের পরিবার ও আহতরা। এসময় তারা তাদের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার এসব মানুষের সঙ্গে একাত্মতা জানাতে এসেছিলেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা নিপুন, সাবেক সংসদ সদস্য তারানা হালিম, শেরে বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবদুস সাত্তার, অভিনেতা সিদ্দিক, তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, সাংবাদিক নিয়াজ জামান সজীব প্রমুখ।
এসময় তারানা হালিম বলেন, ‘‘২০১৪ সালে শুধু এই অপশক্তি ২১ জন পুলিশই হত্যা করেছে। ১৫০টি বাস পুড়িয়েছে। এদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বয়কট করুন আপনারা।’’
ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘‘মানুষ পুড়িয়ে মারা কৌশল নয়, অপকৌশল। কারা এগুলো করছে আমরা জানি। তাদের প্রতিহত করতে হবে।’’
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন
কান্নাজড়িত কণ্ঠে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘‘আজ কেন এই কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের? সৃষ্টিকর্তার দয়ায় আমি বেঁচে আছি। ২০১৩ সালে ২৮ নভেম্বর আমার জন্য বিভীষিকা। হুকুমদাতাদেরও বিচারে আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।’’
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের দিন নিহত পুলিশ সদস্য এনামুল পারভেজের ছোট্ট সন্তান তানহা ইসলাম ও স্ত্রী রুমা আক্তারও এসেছিলেন এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। এসময় রুমা আক্তার তার মেয়ে দেখিয়ে বলেন, ‘‘সবার বাবা আছে, ওর বাবা নাই। পৃথিবীতে কারো সঙ্গে যেন এমন না হয়।’’
এছাড়াও বিএনপির মহাসমাবেশের পরদিন নিহত পুলিশ সদস্য আবু নাইমের মা পারভীন বেগন ও বাবা আলম চৌকিদার তার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান।
সাংবাদিকদের পক্ষে নিয়াজ জামান সজীব বলেন, ‘‘আমরা তো দায়িত্ব পালন করতে যাই আমরা কেন সন্ত্রাসের শিকার হই? আমরা তো কোনো একটা ঘটনারও বিচার পাইনি।’’
অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধের এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বাবুল, অগ্নি সন্ত্রাসে নিহত নাহিদার মা রুনি বেগম, অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার সালাউদ্দিন ভুঁইয়া, রফিকুল ইসলাম, গীতা সেন ও এনামুল কবির।